|
|
|
|
মাটি আঁকড়ে মায়া-মুলায়ম, ‘স্পা’-এ যাবেন গডকড়ী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
উত্তরপ্রদেশে কাল সপ্তম তথা শেষ দফার ভোট। কিন্তু প্রচার শেষ হতে না হতেই কংগ্রেস ও বিজেপির তামাম শীর্ষ নেতারা চলে এলেন দিল্লিতে, কেউ আবার ‘ক্লান্তি কাটাতে’ পাড়ি দিলেন বিদেশেও। মায়া-মুলায়ম-অখিলেশ অবশ্য আঁকড়েই আছেন উত্তরপ্রদেশের জমি।
ষষ্ঠ দফার ভোটের আগের দিনই প্রচার শেষ করে আমেরিকায় গিয়েছেন সনিয়া গাঁধী। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর চেক আপ পূর্ব নির্ধারিতই ছিল। অমেঠি-রায়বরেলীতে দীর্ঘ প্রচারের পর মায়ের সঙ্গী হয়েছেন প্রিয়ঙ্কা বঢরাও। কিন্তু রাহুল? গত কাল উত্তরপ্রদেশে শেষ প্রচারের দিনে তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি দিল্লিতেও নেই। কংগ্রেসের একটি সূত্র বলছে, টানা প্রায় তিন মাস প্রচারের পর রাহুল বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে দলের আর একটি অংশ জানাচ্ছে, রাহুলও আমেরিকায়। ফল ঘোষণার আগের রাতে অর্থাৎ সোমবার রাতে মাকে নিয়ে ফিরবেন ভাইবোন।
মজা হল, রাহুলের প্রচার শেষ হতেই, গা ছাড়া দিয়েছেন কংগ্রেসের বাকিরাও। আজই দিল্লি চলে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক তথা রাহুলের অন্যতম সেনাপতি দিগ্বিজয় সিংহ। দলের
প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান তথা উত্তরপ্রদেশ থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল কালই ফিরেছেন। প্রচার কমিটির অন্য নেতা রাজ বব্বর ইতিমধ্যেই তিন দিনের জন্য পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে। গন্তব্য না জানালেও রাজ বব্বর বলেছেন, তিনি সোমবার রাতে দেশে ফিরবেন।
বিদেশে না গেলেও বিজেপির শীর্ষ নেতারা উত্তরপ্রদেশেও নেই। দলের সভাপতি নিতিন গডকড়ীর কথাই ধরা যাক। আজ দিল্লি এসে গডকড়ী জানান, ক্লান্তি কাটাতে তিনি ‘স্পা’তে যাবেন। দিল্লির উপকণ্ঠে নয়ডায় এক বিজেপি নেতার আয়ুর্বেদিক স্পা রয়েছে। বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-ও এখন দিল্লিতে। জানিয়েছেন, নাতি আর্যবীর, নাতনি দিয়া-র সঙ্গে সময় কাটানোর ইচ্ছে তাঁর।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন সংসদে দলের দুই বিরোধী দলনেতা। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি দিল্লিতেই থাকছেন। জানিয়েছেন, আপাতত বই বই পড়বেন, লেখালেখি করবেন। দু’টি বই পড়ছেন তিনি। একটি দিল্লির লোধি গার্ডেনসের ইতিহাস সংক্রান্ত, অন্যটি জাভেদ আখতারের কবিতার বই। রামদেব প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত ও গুজরাতে নরেন্দ্র মোদী প্রশাসন সম্পর্কে প্রবন্ধ লেখার ভাবনা রয়েছে তাঁর। তবে সুষমা গিয়েছেন মধ্যপ্রদেশে, তাঁর নির্বাচন কেন্দ্র বিদিশায়। সেখানে গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত দু’টি বৈঠক করবেন তিনি।
কিন্তু মায়াবতী বা মুলায়ম সিংহ-অখিলেশ যাদবরা কী করছেন? মায়াবতীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে শেষ দিনের প্রচারে না গেলেও তিনি লখনউতেই রয়েছেন। তা ছাড়া, লখনউ ছেড়ে যাওয়ার বিলাসিতা মুখ্যমন্ত্রী-ই বা দেখাবেন কী করে? সমাজবাদী পার্টি সূত্রে বলা হচ্ছে, মুলায়ম-অখিলেশও লখনউয়ে রয়েছেন। কাল শেষ দফার ভোট গ্রহণের আগে কোনও ভাবেই রাশ আলগা করতে রাজি নন তাঁরা। অখিলেশ আগে স্থির করেছিলেন, ক’দিনের জন্য নিউজিল্যান্ডে কাটিয়ে আসবেন। সেখানে তাঁর খামার বাড়ি রয়েছে। কিন্তু ভোটের গতিপ্রকৃতি দেখে মত বদলেছেন। ঠিক করেছেন, ভোটের পর সম্ভাব্য সমীকরণ আন্দাজ করে আগামী ক’দিন লখনউয়ে বসেই পরপর বৈঠক করবেন।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, মায়া-মুলায়মের লখনউয়ে থেকে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। কারণ, কংগ্রেস-বিজেপি-র কাছে স্পষ্ট, যে তাদের একার লখনউ দখলের ক্ষমতা নেই। কিন্তু মায়া-মুলায়মের তো উত্তরপ্রদেশের তখত দখলের লড়াই। ফলে আগাম কৌশল করে রাখার তাগিদ রয়েছে তাঁদের। তা-ই বলে কংগ্রেস ও বিজেপি শিবিরে কৌশল রচনার বৈঠক যে একেবারে চলছে না তাও নয়। তবে জাতীয় স্তরের যুযুধান দলগুলো ফল ঘোষণার পরেই সক্রিয় হবেন। তার আগে ‘ক্ষণিকের’ বিশ্রাম নিচ্ছেন রাজনাথ-রাজ বব্বর-গডকড়ীরা। |
|
|
|
|
|