নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটপর্ব মিটে গেলেই পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের দাম বাড়তে পারে। তেল সংস্থাগুলি চাইছে, পেট্রোলে লিটার পিছু অন্তত ৩ টাকা, ডিজেলে ৫ টাকা এবং রান্নার গ্যাসে সিলিন্ডার প্রতি ৭০ টাকা দাম বাড়ানো হোক। ইতিমধ্যেই তেল সংস্থাগুলি সরকারের কাছে দাম বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে।
ইরানের তেল রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাদের উপর চাপ বাড়াতে চাইছে আমেরিকা। পাল্টা চাপ হিসেবে ইউরোপীয় দেশগুলিতে তেল রফতানি বন্ধ করেছে ইরান। এই টানাপোড়েনে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১২০ ডলার ছাড়িয়েছে। লাফিয়ে বাড়ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ভর্তুকির বহর। বাড়ছে রাজকোষ ঘাটতিও। গত কাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ফসফেট ও পটাশ সারের উপর ভর্তুকি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তেল সংস্থাগুলির দাবি মেনে কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য পেট্রোল, ডিজেলের পাশাপাশি রান্নার গ্যাসেরও দাম বাড়াতে চায়। কিন্তু রাজনৈতিক বাধ্যবাধ্যকতার ফলে মনমোহন-সরকার কতটা তা করতে পারবে, তা নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির কর্তাদের মনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ গত নভেম্বরে তেলের দাম বাড়ানোর পরই প্রধান শরিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এই ভোটে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেস ভাল ফল করলে জ্বালানির দাম বাড়ানোর ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ নিতে পারে কেন্দ্র।
আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি যে যথেষ্ট ‘উদ্বেগজনক’, তা মানছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। জ্বালানির পিছনে ভর্তুকির বহর এখন দেড় লক্ষ কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার দাবি, ডিজেল, রান্নার গ্যাস ও কেরোসিনে প্রতিদিন তাদের প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এর আগে এক বার পেট্রোলের দাম বাড়ানো হলেও পরে আবার তা সামান্য কমানোও হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তখন অশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৯ ডলারের আশেপাশে। এখন তা বেড়ে ১২০ থেকে ১২৫ ডলারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এখন পেট্রোলের দামও বাড়ানো উচিত বলে দাবি করছে তেল সংস্থাগুলি। |