পাহাড়ের পর্যটন প্রসারে হচ্ছে টাস্ক ফোর্স
পাহাড়ে পর্যটনকে ঢেলে সাজতে টাস্ক ফোর্স গঠনের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কালিম্পংয়ের ডেলোতে রাজ্যের পর্যটন সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহ এবং দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদের প্রশাসক অনিলকুমার বর্মাকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই টাস্ক ফোর্স তৈরির নির্দেশ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দার্জিলিং থেকে কালিম্পং যাওয়ার পথে পাহাড়ের পর্যটন নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ, পর্যটন দফতর, বন দফতর ও সংশ্লিষ্ট আরও কিছু দফতর নিয়ে এই টাস্ক ফোর্স গঠিত হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে টাস্ক ফোর্স রিপোর্ট পেশ করবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পিপিপি মডেলে পাহাড়ে পর্যটনের প্রসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিনের বৈঠকে টাস্ক ফোর্স গঠন করার পাশাপাশি সান্দাকফু ও মিরিকে পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু দার্জিলিং নিয়ে টাস্ক ফোর্সই নয়, দার্জিলিং-সহ গোটা উত্তরবঙ্গের জন্য মেগা ট্যুরিজম প্ল্যান গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। পাশাপাশি রেলের অধীনস্থ ‘রাইটস’-এর তৈরি করা ‘দার্জিলিং মাস্টারপ্ল্যান’ সরকারের হাতে চলে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই প্ল্যানের কাজও শুরু করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠকের পর রাঘবেন্দ্র সিংহ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে তিন দিন ধরে দার্জিলিঙের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে পর্যটনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেছেন। পাহাড়ের অন্য যে-সব জায়গায় সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানেও পর্যটনের প্রসারের কথা বলা হয়েছে।” শুধু দার্জিলিং নয়, এ দিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গের গজলডোবা, কুঞ্জনগরও সাইলিতে ট্যুরিজম পার্ক গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পর্যটন সচিব জানান। মমতা এ দিন কালিম্পংয়ের ভূমিকম্প পীড়িত একটি স্কুল পরিদর্শনে যান। চিত্রভানু ভবনও ঘুরে দেখেন।
কালিম্পঙের পাইন ভিউ নার্সারিতে মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
পর্যটন নিয়ে বৈঠকের পরেই ডেলো বাংলোতে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ, সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি ও কালিম্পংয়ের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী-সহ মোর্চা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পর রোশন গিরি বলেন, “জিটিএ কার্যকর হতে আরও ১০-১২ দিন সময় লাগবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। আমরা অপেক্ষা করব। তবে ২৭ মার্চের সময়সীমার মধ্যে জিটিএ-র দাবি মানা না-হলে ফের আন্দোলন হবে।” মোর্চা সূত্রের খবর, ২৭ মার্চের পরে ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতেই আন্দোলনে নামবে তারা।
পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চলাকালীন মোর্চা সমর্থকদের বিরুদ্ধে যে-সব রাজনৈতিক মামলা ছিল তা প্রত্যাহারের জন্য এ দিন মোর্চার তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে দাবি জানানো হয়। মোর্চা নেতৃত্বের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তা পুনর্বিবেচনার জন্য দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অনিল কুমারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাহাড় সফর বা তাঁর সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্বের বৈঠক নিয়ে এখনই কোনও ‘নেতিবাচক বার্তা’ দিতে চাইছে না সিপিএম। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “আমরা চাই পাহাড়ে শান্তি। আমাদের বক্তব্য, দার্জিলিং পার্বত্য পরিষদের অধীন তিনটি মহকুমার মধ্যে এলাকা সীমিত রেখে এবং অখণ্ডতা বজায় রেখে সংবিধানসম্মত ভাবে যতটা সম্ভব, ততটা স্বশাসন জিটিএ-কে দেওয়া হোক। সমস্যার সমাধান হোক, সেই আশায় আছি। শান্তি যাতে বজায় থাকে। যাঁরা জিটিএ চাইছেন, তাঁদের যদি উনি (মুখ্যমন্ত্রী) আশ্বস্ত করতে পারেন, তা হলে খারাপ কী?”
শুক্রবার কালিম্পংয়ের ডেলো বাংলোয় মোর্চা নেতাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের বৈঠকে পর্যটন নিয়ে টাস্ক ফোর্সের
পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয় রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যে দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ কালিম্পংয়ে একটি হর্টিকালচার
কলেজ, মিরিকে একটি অর্কিড রিসার্চ স্টেশন এবং দার্জিলিংয়ে একটি ফ্লাওয়ার প্রসেসিং অ্যান্ড মার্কেটিং সেন্টার
তৈরি করবে। তবে দার্জিলিঙের কোথায় এটি তৈরি হবে তা এখনও স্থির হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ভূমিকম্পে
ক্ষতিগ্রস্ত কালিম্পং গার্লস হাইস্কুলে যান। এ ছাড়াও, পাহাড়ের তিনটি বিধানসভার প্রতিটিতে দরিদ্রদের
জন্য ৫০০টি করে বাড়ি তৈরির কথা ঘোষণা করেন তিনি। সন্দীপ পালের তোলা ছবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.