আবাসনের দীর্ঘস্থায়ী মালিকানা পাচ্ছেন এমএএমসি-র কর্মীরা
ৎখাত হতে হচ্ছে না চেনা আবাসন থেকে। এডিডিএ দীর্ঘস্থায়ী ভাবে আবাসনের মালিকানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন এমএএমসি-র কর্মীরা। কারখানার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীদের ৯৯৯ বছরের জন্য আবাসন ‘লিজ’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এডিডিএ। এই সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া এমএএমসি কলোনিতে।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মালিকানা সংক্রান্ত চিঠি আবাসিকদের পাঠানো শুরু করা হয়েছে। চিঠি পাঠানো হচ্ছে ধাপে ধাপে। ২০০৫-এর জানুয়ারি থেকে ২০১০-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি বর্গ ফুটে এক টাকা হিসেবে মোট যে ভাড়া হয় তার ১৫ শতাংশ দিতে হবে আবাসিকদের। যে সমস্ত আবাসিকের লিক্যুইডেটরের কাছে পাওনা বকেয়া রয়েছে, তাঁদের এই টাকা দিতে হবে না। সে ক্ষেত্রে বকেয়া থেকেই টাকা কেটে নেওয়া হবে। আবাসিকদের এ বার থেকে নিয়মিত পুরকর দিতে হবে।
ফাইল চিত্র।
১৯৬৫ সালের এপ্রিলে চালু হয় এমএএমসি কারখানা। খনির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি হত এই কারখানায়। ১৯৯২ সালে কারখানাটি বিআইএফআর-এর অধীনে চলে যায়। পাকাপাকি ভাবে কারখানা বন্ধ হয়ে যায় ২০০২ সালের ৩ জানুয়ারি। কারখানার প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক-কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়। ২০০৩ সালের ২৪ জুন আদালত কারখানা ও আবাসন এলাকা পৃথক করে দেয়। সেই বছর ১ জুলাই রাজ্য সরকারের মাধ্যমে আবাসন এলাকার দায়িত্ব পায় এডিডিএ। এ দিকে, ২০১০ সালের ১১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল), দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ও ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেডের (বিইএমএল) কনসর্টিয়াম হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে কারখানার দায়িত্ব পায়। অগস্টে কনসর্টিয়ামের হাতে কারখানার চাবি তুলে দেন লিক্যুইডেটর। সম্প্রতি মহাকরণে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দ্রুত কারখানা চালুর উদ্যোগ হচ্ছে।
২০০৩ সালের জুলাইয়ে আবাসন এলাকার দায়িত্ব পায় এডিডিএ। তার পর থেকেই মালিকানার দাবি জানাতে থাকে বিভিন্ন আবাসিক সংগঠন। প্রতি বর্গফুট ১ টাকা হারে ভাড়া নির্দিষ্ট করে দেয় এডিডিএ। কিন্তু ২৪৯৪ জন বৈধ আবাসিকের অধিকাংশই ভাড়া দিতে রাজি হননি। কারণ, কারখানা থেকে তাঁদের টাকা পাওনা রয়েছে। শুরু থেকেই আবাসনগুলিতে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ডিপিএল। অধিকাংশ বাসিন্দা সেই বাবদও টাকা দিতে অস্বীকার করেন।
সমস্যা মেটাতে এডিডিএ, দুর্গাপুর পুরসভা ও আবাসিক সংগঠনগুলি বারবার বৈঠকে বসে। শেষ পর্যন্ত ২০১০-এর ফেব্রুয়ারিতে ঠিক হয়, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে বৈধ আবাসিকেরা মালিকানা পাবেন। এত দিন পানীয় জল ও বিদ্যুৎ দিয়েছে ডিপিএল। তার জন্য আদালতের নির্দেশ মতো সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে টাকা দেবেন বাসিন্দারা। এ ছাড়া গত কয়েক বছরের বকেয়া কিস্তিতে মেটানোর সুযোগ পাবেন বাসিন্দারা। ২০১০-এর ২১ ডিসেম্বর সব পক্ষের উপস্থিতিতে একটি বৈঠকে ঠিক হয়, কারখানার যে সব প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মী আবাসনে রয়েছেন তাঁরা নির্দিষ্ট শর্তে মালিকানা পাবেন। সেই সিদ্ধান্ত জানানো হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি তা অনুমোদন করে আদালত।
এডিডিএ-র নতুন বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরেই সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করায় উদ্যোগী হয়। সম্প্রতি সেই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিডিএ কর্তৃপক্ষ। আবাসন সংক্রান্ত সমস্যার এমন সমাধানে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন আবাসিকেরা। কারখানার প্রাক্তন কর্মী ক্ষেত্রনাথ মণ্ডল, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়রা জানান, উৎখাত হওয়ার ভয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। এ বার তাঁদের সেই শঙ্কা দুর হল। ‘এমএএমসি টাউনশিপ আবাসিক ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এডিডিএ যে ভাবে আদালতে অনুমোদিত সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে তৎপরতা দেখিয়েছে, তাতে আমরা খুশি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.