পঞ্চায়েতে হোমিওপ্যাথি কেন্দ্র
ইন্টারভিউ হলেও নিয়োগ হয়নি, ক্ষোভ
ন্টারভিউ হয়ে গিয়েছে। প্যানেলও তৈরি হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সেই প্যানেল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, দু’বছর পেরিয়ে গেলেও অনুমোদন আসেনি। ফলে, গ্রাম পঞ্চায়েতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়ে গিয়েছে সেই তিমিরেই। ইন্টারভিউয়ের পর তৈরি হওয়া প্যানেলে যাঁদের নাম ছিল, শেষমেশ তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন। ইতিমধ্যে ডাকযোগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদনপত্রও পাঠিয়েছেন তাঁরা।
রাজ্য সরকারের নির্দেশেই প্রস্তাবিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকেন্দ্রের জন্য চিকিৎসক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। কিন্তু, দু’বছর পরেও কেন নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল না? জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “নিয়োগের আগে রাজ্য সরকারের অনুমোদন লাগে। এখনও সেই অনুমোদন মেলেনি।” এ জন্য অবশ্য প্যানেলে নাম থাকা অধিকাংশ চিকিৎসকই বামফ্রন্ট সরকারকেই দুষছেন। তাঁদের বক্তব্য, বাম-আমলেই এ ক্ষেত্রে অযথা গড়িমসি করা হয়েছে।
গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবার ‘হাল’ ফেরাতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে দাতব্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা হয়েছিল। ২০০৯ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে ‘ন্যাশনাল রুরাল হেলথ মিশনে’র অধীন (এনআরএইচএম) এই জেলায় ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার অনুমতি পায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। পরে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে চিকিৎসক নিয়োগ করার জন্য ১৯৮৮ ও ২০০৬ সালের সরকারি গাইডলাইন মেনে চিকিৎসকদের ইন্টারভিউ হয়। এবং চিকিৎসকদের তালিকা গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জেলা পরিষদের কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে বেশ কয়েকটি ধাপে সেই সব তালিকা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠায় জেলা পরিষদ। এই জেলার যে ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে হোমিওপ্যাথি দাতব্য চিকিৎসালয় খোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার মধ্যে রয়েছে নারায়ণগড়ের ২টি, গড়বেতার ১টি, গোয়ালতোড়ের ১টি, শালবনির ২টি, কেশপুরের ১টি, মেদিনীপুরের ১টি, খড়্গপুর-২ নম্বর ব্লকের ১টি, পিংলার ১টি, সবংয়ের ১টি, ডেবরার ২টি, ঝাড়গ্রামের ২টি, বিনপুর-১’এর ১টি, বিনপুর-২’এর ২টি, জামবনির ২টি, নয়াগ্রামের ৩টি, ঘাটালের ১টি ও দাসপুর-২’এর ১টি গ্রাম পঞ্চায়েত।
দু’বছর আগে জেলা পরিষদ থেকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল, তাতে বলা হয়, গ্রাম পঞ্চায়েতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিয়োগের প্রশ্নে প্রথমে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির নোটিস-বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। কেবলমাত্র ডিএমএস ও বিএইচএমএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা আবেদন করতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদনগুলি পাওয়ার পরে ইন্টারভিউ করে প্যানেল গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির রেজ্যুলেশন করে প্রস্তাবাকারে জেলা পরিষদে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। জেলা পরিষদ থেকে ওই প্রস্তাব পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠানোর নিয়ম। রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে তবেই চুক্তির ভিত্তিতে ওই প্যানেল থেকে চিকিৎসক নিয়োগ করা যাবে।
সেই মতোই অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি প্যানেল প্রস্তুত করে জেলা পরিষদে পাঠায়। জেলা পরিষদ কয়েক বার সেই তালিকা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে পাঠায়। যেমন, ২০১০ সালের ২২ জুন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম-সচিবকে চিঠি লেখেন জেলা পরিষদের উপ-সচিব। কিন্তু, মেডিক্যাল অফিসার নিয়োগের অনুমোদন মেলেনি। জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, ২০১০ সালে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন গাইডলাইন বেরোয়। এই গাইডলাইনের সঙ্গে ১৯৮৮ ও ২০০৬ সালের গাইডলাইনের পার্থক্য রয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই কারণেই চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়টিতে চূড়ান্ত অনুমোদন মিলছে না। দীপককুমার পাহাড়ি, সজলকুমার ঘোষ, নীলকমল সাউয়ের মতো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের বক্তব্য, “গ্রামীণ স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে দ্রুত প্রস্তাবিত চিকিৎসাকেন্দ্রগুলি খোলা উচিত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.