রাজ্য সরকারের ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী দুর্গম ও উপদ্রুত এলাকার হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের স্নাতকোত্তরে ভর্তির পরীক্ষায় ৩০ শতাংশ বেশি নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত আপাতত বলবৎ করা যাবে না। বাড়তি নম্বর দেওয়ার প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার জন্য বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সংশ্লিষ্ট মামলার ফয়সালা না-হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
সরকারের মতে, ৩১ মার্চের মধ্যে এই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না-হলে স্নাতকোত্তর মেডিক্যালে পরবর্তী শিক্ষাক্রম চালু করতে বিলম্ব হবে। মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া বা এমসিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী সেটা করা যায় না। কিন্তু এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ যে-রায় দিয়েছে, তাতে একক বেঞ্চে মামলার চূড়ান্ত রায় না-হওয়া পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতেই হবে।
ডাক্তারেরা প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের হাসপাতালে যেতে না-চাওয়ায় সেখানকার বাসিন্দারা চিকিৎসা পান না। সরকারের বক্তব্য, ওই সব এলাকায় যাওয়ার জন্য চিকিৎসকদের উৎসাহিত করতেই উচ্চশিক্ষায় তাঁদের ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি নম্বরের ব্যবস্থা হয়েছে। সরকার ১২টি জেলার হাসপাতালকে দুর্গম ও উপদ্রুত এলাকার স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ওই সব হাসপাতালে গেলে বাড়তি নম্বর মিলবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ৭০ জনেরও বেশি সরকারি চিকিৎসক হাইকোর্টে মামলা করেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘দুর্গম’ অঞ্চল চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে অসঙ্গতি আছে। কোনও কোনও জেলায় প্রকৃত দুর্গম এলাকা রয়েছে, সহজগম্য এবং নাগরিক সুবিধাপ্রাপ্ত হাসপাতালও আছে। আবার যে-সব জেলাকে অগ্রবর্তী এবং সুগম বলা হয়েছে, সেখানে অসংখ্য হাসপাতাল রয়েছে, যা অত্যন্ত দুর্গম।
শুনানি পর্বেই বিচারপতি তপেন সেন জানিয়ে দেন, মামলা শেষ হওয়ার আগে বেশি নম্বর দিয়ে কাউকে ভর্তি করা যাবে না। তাঁর এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কিছু সরকারি চিকিৎসক ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন। দিন চারেক শুনানি চলার পরে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সেই আপিল মামলা খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি সেনের নির্দেশ বহাল রেখেছে। এখন বিচারপতি সেনের এজলাসেই এই মামলার শুনানি চলবে। তার ফলে এখনই ঘোষিত দুর্গম ও উপদ্রুত এলাকার হাসপাতালের চিকিৎসকদের স্নাতকোত্তর এন্ট্রান্সে ৩০ শতাংশ বেশি নম্বর দিয়ে ভর্তি করা যাবে না। |