ভল্ট ভেঙে ব্যাঙ্কে লুঠের চেষ্টা |
ফের ব্যাঙ্কের ভল্ট ভেঙে লুটপাটের চেষ্টা হল। বুধবার রাতে মালবাজার থানার মৌলানিতে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখায় লুটপাটের চেষ্টা হয়। গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা গ্রিল কেটে, তালা ভেঙে ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢোকার পরে পাঁচ ফুট উঁচু দেওয়ার ভেঙে ভল্ট খোলার চেষ্টা করেন। দেওয়াল ভাঙার শব্দ পেয়ে বাড়ির মালিক লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করলে ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীরা সেখানে যান। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ গামছা বাঁধা শাবল, ছোট কাঁচা বাঁশের লাঠি, লোহা কাটার ব্লেড, স্ক্রু ডাইভার, ব্যাগ, দড়ি আটক করেছে। দুষ্কৃতীদের সন্ধানে বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর দীপা আনা হয়। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের পিছনের রেল লাইন ধরে চক মৌলানির মাস্টারপাড়ার ভিতর দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। মালবাজারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অরিন্দম সরকার বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” গত কয়েক মাস ধরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক গ্রামীণ ব্যাঙ্কে লুটপাটের চেষ্টা হচ্ছে। গত ৩১ জানুয়ারি ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ২৩ লক্ষ টাকা লুট হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজগঞ্জের আমবাড়ি ফালাকাটা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখায় লুটের চেষ্টা হয়। তার আগে ময়নাগুড়ি এবং তালমাতেও একই ঘটনা ঘটে। কেন দুষ্কৃতীরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলিতে একের পর এক হামলা করছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকার স্কুল শিক্ষকদের বেতন হয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে। প্রতিটি ব্যাঙ্কে মাসের শেষে প্রচুর টাকা ঢোকে। এ ছাড়া, গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলিতে নিরাপত্তা রক্ষী না-থাকায় নজরদারি ঢিলেঢালা থাকে। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক ম্যানেজার শ্যামলকান্তি ভট্টাচার্য বলেন, “শুধুমাত্র মাসের শেষেই গ্রামীণ ব্যাঙ্কে টাকা থাকে, এটা ঠিক নয়। সম্ভবত গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি প্রত্যন্ত এলাকায় থাকায় দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।” মালবাজারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের যুক্তি, নিরাপত্তা রক্ষী না-থাকায় ব্যাঙ্কগুলি দুষ্কৃতীদের টার্গেট হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, “প্রতিটি ব্যাঙ্কের সামনে থেকে একই ধরনের সামগ্রী উদ্ধার করা হচ্ছে। কোনও একটি দলই পর পর হামলার ঘটনায় জড়িত কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মৌলানির গ্রামীণ ব্যাঙ্কটি বাজারের পাশে একটি ভাড়া বাড়ির একতলায়। দোতালায় থাকেন বাড়ির মালিক পরেশ তেলি। রাতে তিনি ব্যাঙ্কে দেওয়াল ভাঙার শব্দ পেয়ে ভাই নরেশবাবুকে মোবাইলে খবর দেন। নরেশবাবু ব্যাঙ্কের পাশেই একটি বাড়িতে থাকেন। তিনি খবর দেন অন্যদের। এভাবেই ক্রান্তি ফাঁড়িতে খবর পৌঁছয়। পরেশবাবু বলেন, “পথ দুর্ঘটনায় এলাকার এক যুবকের মৃত্যু হওয়ায় রাত ১২টা পর্যন্ত রাস্তায় লোকজন ছিল। ঘরে ফিরে সবে ঘুমিয়েছি, দেওয়াল ভাঙার শব্দ পাই।” যুবকের মৃত্যু। বুধবার রাতে মালবাজারের মৌলানি বাজার সংলগ্ন এলাকার এক যুবক মোটর বাইকে বাড়িতে ফেরার সময়ে বৌলবাড়ি এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান।
|