এক বধূকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার সরেশডাঙা গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সবিতা পাল (২৩)। খুনের অভিযোগে পুলিশ সবিতাদেবীর স্বামী তারাশঙ্কর পাল ও ভাসুর শিবশঙ্কর পালকে বুধবার রাতে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের খাতড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক দু’দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান থানার লতা গ্রামের বাসিন্দা ভরতচন্দ্র কুম্ভকারের মেয়ে সবিতার সঙ্গে রানিবাঁধের সরেশডাঙা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় কৃষিজীবী তারাশঙ্কর পাল বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালের জুন মাসে। ভরতবাবুর অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের উপরে সাংসারিক নানা কারণে অত্যাচার চালাচ্ছিল ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বুধবার সন্ধ্যায় সবিতাকে খুন করেছে ওরাই।” ভরতবাবুর আরও বলেন, “বুধবার বিকেলে সবিতা আমাকে ফোন করে তাঁর উপরে স্বামী, ভাসুর অত্যাচার করছে বলে জানায়। আমাকে তাড়াতাড়ি আসার জন্য বলেছিল সবিতা। তারপর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ জামাই ফোন করে জানায় শরীর ভীষণ খারাপ হয়ে যাওয়ায় ওরা সবিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। জামাই আমাকে তাড়াতাড়ি চলে আসার জন্যও বলে।” ভরতবাবুর দাবি, “শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সবিতাকে খুন করার পরে তাঁকে অসুস্থ দেখিয়ে রানিবাঁধ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।” ওই রাতে ভরতবাবু রানিবাঁধ থানায় মৃতার স্বামী তারাশঙ্কর পাল, ভাসুর শিবশঙ্কর পাল-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।” শিবশঙ্কর পালের স্ত্রী সাবিত্রী পাল অবশ্য খুনের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “বাড়িতে সবিতা কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা তাঁকে খুন করিনি।” রানিবাঁধের ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ শুভদীপ দত্ত বলেন, “ওই বধূকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে দেখে অনুমান, বিষক্রিয়ায় ওই বধূর মৃত্যু হয়েছে।” বৃহস্পতিবার দেহটির সুরতবহাল করেন রানিবাঁধের বিডিও তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়। বিডিও অবশ্য এ ব্যাপারে কিছু জানাতে চাননি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “ওই বধূকে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর বাবা অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কীভাবে ওই বধূর মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টে না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। ঘটনার তদন্ত চলছে।” |