খোলা গাড়িতে করে নোংরা-আবর্জনা নিয়ে যাওয়ার ফলে বহরমপুরে দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুর-কর্তৃপক্ষ সব জেনেও কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ। বহরমপুর পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়ার ডাস্টবিনের যাবতীয় নোংরা-আবর্জনা প্রতি দিন সকালে পুরসভার সাফাই কর্মীরা গাড়ি বোঝাই করে সৈদাবাদ এলাকার ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে যায়। কিন্তু ডালা খোলা অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ফলে চারপাশ দুর্গন্ধে ভরে যায়। ডালা উপচে ওই নোংরা-আবর্জনা শহরের রাস্তায় পড়তে পড়তে যায়। ওই ঘটনায় নাগরিক সমাজ পুরসভার বিরুদ্ধে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। তা দৃশ্যদূষণও ঘটাচ্ছে। বহরমপুর পুরসভার সাফাই গাড়ির সংখ্যা ১৮টি। এমনিতেই ওয়ার্ডের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কম। ফলে ২৫টি ওয়ার্ডের ডাস্টবিন থেকে আবর্জনা সাফাই করতে করতে বেলা ১১টা হয়ে যায়। সারা দিনের ময়লা-আবর্জনা ডাঁই হয়ে অনেক সময়ে ডাস্টবিন থেকে উপচে পাড়ার রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে থাকে। খোলা ডাস্টবিন থাকার ফলে যেমন ওই সমস্যা দেখা দেয়, তেমনই সাফাই করার পরে গাড়িতে খোলা অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ফলেও শহর দূষিত হচ্ছে। |
এমনকী আবর্জনা সংগ্রহ করার সময়ে সাফাই কর্মীরা হাতে গ্লাভস, মাস্ক ও গামবুট ব্যবহার করেন না। পুর-কর্তৃপক্ষই সে সব পুরকর্মীদের সরবরাহ করেনি বলে অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বহরমপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক পুষ্পক পাল বলেন, “খোলা গাড়িতে নোংরা-আবর্জনা নিয়ে যাওয়ার ফলে বাতাসে তা উড়ছে। ফলে বায়ু দূষণের পাশাপাশি বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে। খুদে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের উপরেও তার প্রভাব পড়ছে।” তাঁর কথায়, “সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছেগ্লাভস, মাস্ক, গামবুট ব্যবহার না করে নিয়মিত ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করার ফলে সাফাই কর্মীদের গড় অসুস্থতার সংখ্যা বেশি। অনেকে যক্ষা রোগেও আক্রান্ত।” বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের অধ্যক্ষ সোমেশ রায় বলেন, “সচেতনতার অভাবের ওই আবর্জনা খোলা অবস্থায় শহরের বিভিন্ন বাজার-হাসপাতালের পাশ দিয়ে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে বাতাসে উড়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায়।” পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য অবশ্য বলেন, “পরিবেশের উপরে তার প্রভাব রয়েছে বিষয়টি আমরা জানি। এজন্য বেসরকারি একটি সংস্থাকে ওই কাজের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। যাতে ওই শহরের যাবতীয় আবর্জনা ঢাকা দেওয়া অবস্থায় ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়। সেই মতো চুক্তিও হয়েছে। খুব শিগগির পুর-এলাকায় ওই সংস্থা কাজ শুরু করে দেবে।” |