ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সমস্ত বাম প্রার্থীদের হারিয়ে জয় ছিনিয়ে নিলেন কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের প্রার্থীরা। ১১ বছর পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। এত দিন ধরে সিপিএম তথা বামপ্রার্থীরা এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা যৌথ ভাবে একটি ‘মিলিজুলি’ প্যানেল তৈরি করে ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিসেশনের বিভিন্ন পদ ভাগাভাগি করে নিতেন। কোনও ভাবেই কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী বা প্রতিপক্ষ প্যানেল জমা পড়ত না।
আইনজীবীদের একাংশের অভিমত, আইনজীবী সংগঠনগুলির নির্বাচনে বিরুদ্ধ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমাই নেওয়া হত না। এমনকী নির্দল প্রার্থী হিসেবেও কেউ দাঁড়াতে পারতেন না। সেই ‘পরম্পরা’-র ব্যতিক্রম
ঘটল ২০১২ সালের ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশন এবং হাইকোট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে।
স্বভাবতই দু’টি নির্বাচনকে ঘিরেই প্রবল উত্তেজনা ছিল। কার্যত বিধানসভা ভোটের উত্তাপ। পোস্টার, ব্যানারে ছয়লাপ ছিল আদালত চত্বর। ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশনের এ বারের নির্বাচনে ১৩টি আসনেই বাম প্রার্থীরা পরাজিত হন। কংগ্রেস-তৃণমূলের যৌথ প্যানেল সব ক’টি আসনেই জয়ী হয়। মোট ভোটার ছিলেন ৮২৭ জন। ভোট দিয়েছেন ৬৪৬ জন। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশন
হল রাজ্যের জেলা ও মহকুমা স্তরে আইনজীবীদের সংগঠন।
কয়েক দিন আগে অনুষ্ঠিত ত্রিপুরার হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনেও ধরাশায়ী হয়েছেন বামপ্রার্থীরা। ১১টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস প্রার্থীরা পেয়েছেন ৬টি, সিপিএম ৩টি ও তৃণমূল কংগ্রেস ২টি। এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৩৫৬, ভোট দিয়েছেন ৩২৯ জন।
একটি ব্যালট বাতিল হয়েছে। হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে বাম-বিরোধী আশিস নন্দীর কাছে সারা ভারত আইনজীবী ইউনিয়নের ভাইস চেয়ারম্যান, বামপ্রার্থী শরদিন্দু চক্রবর্তীর পরাজয় একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলে হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশ দাবি করছেন। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের আহ্বায়ক মানিক দেব বলেন, ‘‘এই নির্বাচনের ফলাফল ত্রিপুরা রাজনীতিতে নতুন বার্তা বয়ে আনছে। ২০১৩ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন সিপিএমের কাছে ক্রমশই কঠিন চ্যালেঞ্জ
হয়ে উঠবে।’’
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের এক প্রবীণ সদস্যর কথায়, রাজ্যে আইনজীবীদের দু’টি সংগঠনেই বামপ্রার্থীদের ‘ভরাডুবি’ রাজ্য রাজনীতিতে ‘নতুন মাত্রা’ যোগ করেছে। তাঁর মতে এই দু’টি নির্বাচন দিয়েই ত্রিপুরায় ‘পরিবর্তনে’র হাওয়া বইতে শুরু করল। |