মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘খাস তালুক’ হাজরার আশুতোষ কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন ‘বয়কট’ করছে এসএফআই। একই সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছে স্কটিশ চার্চ কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। দুই ক্ষেত্রেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) ‘সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত বলে এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা সভাপতি অভিষেক মিত্র বৃহস্পতিবার জানান। শেষপর্যন্ত এসএফআই ওই সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে দীর্ঘ তিন দশক পরে আশুতোষ এবং আট বছর পরে স্কটিশ চার্চ কলেজের ছাত্র সংসদ তাদের হাতছাড়া হতে চলেছে।
রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একদা আশুতোষ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কলেজের প্রাতঃবিভাগ যোগমায়া দেবী কলেজের ছাত্রী ছিলেন। দুই কলেজে টিএমসিপি জিতে যাওয়ায় পার্থবাবু তাদের কর্মী-সমর্থকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এসএফআই নেতৃত্ব এ দিন অভিযোগ করেন, তাঁদের সমর্থকেরা আশুতোষ কলেজে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। অনেকের মনোনয়ন পত্র ছিঁড়ে দিয়েছেন টিএমসিপি সমর্থকেরা। ছাত্রছাত্রীদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। স্কটিশ চার্চ কলেজেও একই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। এই ‘অগণতান্ত্রিক’ পরিবেশের জন্যই তাঁরা দুই কলেজে ভোট বয়কট করছেন।
১৯৮২ সাল থেকে আশুতোষ কলেজের ছাত্র সংসদ এসএফআইয়ের দখলে। রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পটভূমিতে দক্ষিণ কলকাতার অনেক কলেজেই তারা নিয়ন্ত্রণ হারালেও আশুতোষ কলেজ তাদের ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসাবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার এসএফআই নেতৃত্ব ওই অভিযোগ করেন। টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা অবশ্য বলেন, “ছাত্র পরিষদ, ডিএসও, এবিভিপি তো দিব্যি মনোনয়ন জমা দিয়েছে। যত সমস্যা হল এসএফআই-এর! আসলে নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই ওরা রণে ভঙ্গ দিচ্ছে।” প্রসঙ্গত, এ দিনই ডিএসও অভিযোগ করেছে, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সমর্থকদের টিএমসিপি মারধর করেছে। সংগঠনের রবীন্দ্রভারতী ইউনিটের সম্পাদক গৌরাঙ্গ খাটুয়া জানান, তাঁদের যে সব সমর্থক ছাত্র সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন, টিএমসিপি সদস্যরা তাঁদের ভয় দেখিয়ে নাম প্রত্যাহারে বাধ্য করছে।” এ ব্যাপারে শঙ্কুর বক্তব্য, “কী হয়েছে জানি না। প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।” |