স্কুল থেকে ফেরার পথে উধাও হয়ে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির মেয়েটি। দুপুরে আপ তুফান এক্সপ্রেসে তাকে উদ্ধার করে কয়েক জন যাত্রী দুর্গাপুর স্টেশনে নামান। কিন্তু যে যুবক তাকে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ, সে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দেয়। পরে এক জখম যুবক উদ্ধার হয়েছে।
রেলপুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাশীপুর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর বাড়ি কলকাতার বিডন স্ট্রিটের কাছে রামকৃষ্ণ বাগচি লেনে। বাবা ছিলেন বায়ুসেনার কর্মী। কয়েক বছর আগে তিনি মারা গিয়েছেন। মেয়েটি দিদি ও মায়ের সঙ্গে থাকে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার পরিজনেরা দুর্গাপুরে এলেও সরকারি বিধি মেনে তাকে একটি সরকারি হোমে রাখা হয়। আজ, শুক্রবার শিশুকল্যাণ কমিটি মারফত তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা।
মেয়েটির মা রেলপুলিশকে জানিয়েছেন, মেয়েকে নিয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে তিনি বাড়ি থেকে কিছু দূরে রাস্তার মোড়ে ফুল কিনতে দাঁড়িয়েছিলেন। ইন্দ্রানী বাড়ির দিকে পা বাড়ায়। এর পরে আর তাকে পাওয়া যায়নি। বড়তলা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। দুপুর দেড়টা নাগাদ দুর্গাপুর থেকে ফোন আসে। আপ তুফান এক্সপ্রেসের যাত্রী, দুর্গাপুরের মেন গেট এলাকার বাসিন্দা
পঙ্কজ চক্রবর্তী জানান, ব্যান্ডেলে এক যুবকের সঙ্গে ট্রেনে উঠেছিল মেয়েটি। যুবকটি তাকে নিয়ে বারবার এক কামরা থেকে অন্য কামরায় চলে যাচ্ছিল। ওদের গতিবিধি দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। পরে বর্ধমান থেকে ট্রেনে ওঠেন রায়নার শালগাছা গ্রামের কৃষ্ণচন্দ্র দে। তিনি যাচ্ছিলেন দেওঘর। মানকর স্টেশনের কিছু আগে তিনি যুবককে চেপে ধরেন। তাঁর কথায়, “যুবকটির মুখ থেকে দেশি মদের গন্ধ বেরোচ্ছিল। পোশাক খুব নোংরা, চুল উসকোখুসকো। এই সব দেখেই সন্দেহ হয়।” আরও কয়েক জন যাত্রী তাঁর সঙ্গে যোগ দেন। যুবকের থেকে ছাত্রীর ব্যাগ কেড়ে নিয়ে স্কুলের ডায়েরি থেকে মেয়েটির বাড়ির নম্বর উদ্ধার করেন তাঁরা। কিন্তু মানকরের কাছেই যুবকটি চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালায়।
দুর্গাপুর স্টেশনে নেমে রেলপুলিশকে মেয়েটি জানায়, সে যুবকটিকে চিনত না। কিন্তু যুবকটি বলে, তাকে সে ভালোবাসে, সে কি তাকে বিয়ে করবে? কেন এক ‘অপরিচিতের’ সঙ্গে সে বাড়ি থেকে এত দূরে চলে এল তার ব্যাখ্যা অবশ্য পুলিশ পায়নি। বিকেলে মানকর ও পানাগড়ের মাঝে রেললাইনের কাছে এক জখম যুবককে পড়ে থাকতে দেখে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার জ্ঞান ফিরলে তবেই পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবে। |