আদালতে তোলা হল ধৃত মাওবাদীদের
হরতলির কয়েকটি লেদ কারখানায় রকেট লঞ্চারের যন্ত্রাংশ তৈরি করছিল মাওবাদীরা। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) দাবি করছে, কলকাতা ও বেলঘরিয়া থেকে বুধবার পাঁচ মাওবাদী গ্রেফতার হওয়ার পরে তাদের জেরা করে এই তথ্য জানা গিয়েছে। এসটিএফের দাবি, বেলঘরিয়ায় একটি কারখানায় হানা দিয়ে ২৫টি ছ’ঘরা লোহার ‘সকেট’ও উদ্ধার হয়েছে। ওই কারখানা থেকে যন্ত্রাংশ তৈরির পরে সেগুলি বিভিন্ন রাজ্যে নিয়ে যেত মাওবাদীরা। যন্ত্রাংশগুলি জোড়া লাগিয়ে রকেট লঞ্চার তৈরি করে ছত্তীসগঢ়, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় সেগুলি পাঠানো হত।
এসটিএফ জানায়, তাদের সঙ্গে অন্ধ্র পুলিশের যৌথ অভিযানে ধৃত মাওবাদীদের এক জনের নাম সুধানালা রামকৃষ্ণা ওরফে আর কে ওরফে এস ভি কস্তুরী (৬০)। তিনি সিপিআই (মাওবাদী) সংগঠনের সেন্ট্রাল টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান এবং এক জন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। বাকিদের নাম দীপক কুমার (৪০), সুকুমার মণ্ডল ওরফে সোম রাই (২৮), বাপি মুদি ওরফে মদন (২৭) এবং শম্ভু পাল (৬৫)। দীপকের বাড়ি ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ জেলায়। সুকুমারের বাড়ি খড়দহের মাহিষ্যপাড়ায়। বাপি বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা এবং শম্ভুর বাড়ি হুগলির দিয়াড়ায়। ধৃতদের সকলেই একাধিক নাম ব্যবহার করে বলে পুলিশের বক্তব্য। এসটিএফের দাবি, জেরায় রামকৃষ্ণ জানান, কিষেণজির মৃত্যুর পরে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব তাঁর উপরেই বর্তেছে। ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্রপ্রদেশে দলের ‘টেকনিক্যাল সেল’-এর দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। কিষেণজির মৃত্যুর পরে দলকে পুনরুজ্জীবিত করতেই তাঁকে এ রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল। ধৃতদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা, সন্ত্রাসবাদী কাজে জড়িত থাকা ও বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাঁচ জনকেই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। বিচারক শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ধৃতদের ১৩ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিন ওই মাওবাদীদের পক্ষে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি।
এসটিএফের দাবি, কলকাতার মহম্মদ আলি পার্কের কাছে রামকৃষ্ণ এবং দীপক আসবেন তা আগাম জানা যায়। বুধবার দুপুরে জোড়াসাঁকো থানা এলাকার নীলমাধব সেন রোড এবং পি সি সরকার স্ট্রিটের সংযোগস্থল থেকে প্রথমে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি ডায়েরি, রকেট লঞ্চারের ফোটোকপি, একটি গাইড ম্যাপ, নগদ আড়াই লক্ষ টাকা, আড়াই কিলো বিস্ফোরক এবং ২৫ রাউন্ড গুলি। পরে তাদের জেরা করে বেলঘরিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় সুকুমার, বাপি এবং শম্ভুকে। সেখানকার একটি লেদ কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয় ২৫টি সকেট।
হুগলির দিয়াড়া স্টেশন লাগোয়া গোবিন্দপুর গ্রামের কুমোরপাড়ায় শম্ভুবাবুর দোতলা বাড়ি। তিনি বেলঘরিয়ার একটি দোকানে কাঠের কাজ করেন। তাঁর সঙ্গে যে মাওবাদীদের কোনও যোগ থাকতে পারে, তা ভাবতে পারছেন না বাড়ির লোক। তাঁর দাদা শিবু পাল বলেন, “ও একেবারেই নিরীহ ভালমানুষ।” শম্ভুবাবুর পুত্রবধূ সুলেখা বলেন, “শ্বশুরমশাই কাজ ছাড়া আর তো বাড়ি থেকে বেরোতেন না। অচেনা লোকজনও বাড়িতে আসত না।” পুলিশ এ দিন শম্ভুবাবুর বাড়িতে তদন্তে আসে।
বছর খানেক আগে মাওবাদী নেতা সুদীপ চোংদার-সহ পাঁচ মাওবাদীকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। ধৃতদের জেরা করে কলকাতা ও শহরতলির গোপন ডেরা থেকে মাইন এবং ওয়্যারলেস তৈরির প্রচুর যন্ত্রপাতি উদ্ধার হয়েছিল।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.