কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকর্মীকে নিগ্রহের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর তিন সঙ্গীকে এক দিনের জন্য জেল-হাজতে পাঠাল আদালত। জামিনের আবেদন জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তা খারিজ করে চার জনকেই হাজতে রাখার নির্দেশ দেন আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুপর্ণা রায়। আজ, শুক্রবার জেল-হাজত থেকে অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজির করানো হবে। কেস ডায়েরিও পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আজ আবার জামিনের আবেদন জানানো হবে বলে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা জানান।
|
আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় |
‘পুলিশকর্মীর উপরে হাত তোলা মোটেই ভাল কাজ হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। তিনি এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেটের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। বৈঠকের পরে পুলিশ-নিগ্রহ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। রাজ্যপাল বলেন, “এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও পুলিশকর্মীকে মারধর করা হয়েছে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কিছুটা সময় লেগেছে।”
বুধবার বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ খিদিরপুর রোড এবং ডায়মন্ড হারবার রোডের মোড়ে ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা আকাশের গাড়ি আটকান। অভিযোগ, এক পুলিশকর্মীর সঙ্গে বচসা শুরু হয় আকাশ এবং তাঁর সঙ্গীদের। ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত বিদ্যাসাগর সেতু ট্রাফিক গার্ডের ওসি এবং কনস্টেবলকে তাঁরা ধাক্কাও দেন বলে অভিযোগ। তার পরেই তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের জেল-হাজতে রাখার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানান। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তাপস দে চৌধুরী, অলোক দত্ত, তীর্থঙ্কর রায়, শান্তনু দত্তেরা আদালতে জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। ইচ্ছাকৃত ভাবে জামিন-অযোগ্য ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। ঘটনা সাজাতে পুলিশ দেরিতে মামলা (এফআইআর) দায়ের করে। আইনজীবীদের দাবি, ট্রাফিক সিগন্যালে আকাশের গাড়ি আটকানোর পরে অভিযুক্তেরা পুলিশের কাছে ‘সিজার লিস্ট’-এর প্রতিলিপি চেয়েছিলেন। সেই সময় পুলিশই তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে বলে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন। তাঁরা বলেন, এই ঘটনায় মোটরযান আইনে মামলা করা যেত। আইনজীবীরা আরও জানান, পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠলেও ওই সংক্রান্ত কোনও মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়নি। জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী পীযূষকান্তি মণ্ডল। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক প্রথমে অভিযুক্তদের ৩ মার্চ পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানান। তার পরে বিচারক অভিযুক্তদের এক দিনের জন্য জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। |