পর্যটনের প্রসারে সচিবকে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর
পাহাড়ে পর্যটন নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে উষ্মা প্রকাশ করলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং থেকে কালিম্পং যাওয়ার পথে একাধিকবার নানা জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যেই বলতে শোনা যায়, “এত সব সুন্দর জায়গা অবহেলায় পড়ে রয়েছে। কেন কটেজ বানিয়ে পর্যটনের প্রসার করা যাচ্ছে না? মানুষ এমন নির্জন, মনোরম জায়গায় বেড়াতে ভীষণ পছন্দ করেন। বারবার বলছি। তবুও আপনারা কিছু করছেন না কেন?” পর্যটন সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহকে ধমকের সুরে তিনি তখন বলেছেন, “আমি কিন্তু চ্যাংড়ামি করছি না। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কথাটা বলছি। আপনারা কিছু করছেন না কেন? মনে রাখবেন, পর্যটনের প্রসার হলেই প্রচুর রাজস্ব আসবে।”
দার্জিলিং থেকে কালিম্পং যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
বস্তুত, ৯ মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে এই নিয়ে পঞ্চম বার পাহাড় সফর করছেন মমতা। তার আগে রেলমন্ত্রী থাকাকালীনও দার্জিলিং সফরের সময়ে পাহাড়ের পর্যটন প্রসারের ব্যাপারে ‘অনেক কিছু’ করার কথা বারেবারেই বলেছেন। কিন্তু, নতুন সরকারের আমলে পাহাড়ের পর্যটন প্রসারের জন্য নতুন করে কোনও কাজই হয়নি বলে পর্যটন ব্যবসায়ীদের অনেকের অভিযোগ। শুধু তাই নয়, বুধবার দার্জিলিঙে জিমখানা ক্লাবের প্রকাশ্য সভায় মোর্চা নেতা-সমর্থকদের মধ্যেও পর্যটন ব্যবসার উন্নতি থমকে থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এ দিন সকালে দার্জিলিঙের ‘রিচমন্ড হিল’ বাংলো থেকে মুখ্যমন্ত্রী বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ কালিম্পঙের উদ্দেশে রওনা হন। পথে নানা জায়গায় দাঁড়ান। কোথাও তাঁকে পাহাড়বাসীদের কাছে সম্মানসূচক উত্তরীয় ‘খাদা’ উপহার দেওয়া হয়। কোথাও ফুল। তিনিও পাল্টা ‘খাদা’ পরিয়ে দেন কাউকে কাউকে। ঘুম এলাকায় একটি বৌদ্ধ গুম্ফায়ও যান। সেখানে পর্যটকদের জন্য কী ব্যবস্থা করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। তার পরে তাকদার দিকে কিছুটা এগিয়ে সুদৃশ্য পাইনের বনের পাশে তিনি গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়েন। ডেকে নেন পর্যটন সচিবকেও। ছিলেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও। ওই জায়গায় কেন পর্যটকদের জন্য ‘কটেজ’ তৈরি করা যায়নি, সেই প্রশ্নে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার কালিম্পংয়ের ডেলোয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সন্দীপ পাল।
মোর্চা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আগেও একাধিকবার ওই পাইনের বন লাগোয়া এলাকায় পর্যটন প্রসারে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটন দফতরের পক্ষ থেকে তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে কাজের কাজ যে হয়নি, তা এ বার মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও স্পষ্ট হয়ে যায়। প্রশাসনের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে পর্যটন দফতরের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে কী করা যায়, সেই রূপরেখা তৈরির প্রক্রিয়া অবশ্য শুরু হয়েছে।
এ দিন বেলা ৪টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী কালিম্পং শহর পেরিয়ে ডেলো বাংলোয় পৌঁছন। সেখানে গিয়ে গোর্খা পার্বত্য পরিষদের তৈরি বাংলোর বেহাল দশা দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পর্যটন সচিব, জেলাশাসক এবং কালিম্পংয়ের বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রীকে বলেন, “বাংলোটির এই অবস্থা কেন? এটাকে ভাল করতে হবে। আরও পর্যটক যাতে সেখানে থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। আপনারা পরিকল্পনা তৈরি করুন।”
তিস্তাবাজারে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
আজ, শুক্রবারও মুখ্যমন্ত্রীর ডেলোয় থাকার কথা। সেখানে দুপুরে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা রয়েছে। আগামিকাল, শনিবার শিলিগুড়ি হয়ে দুপুরের বিমানে কলকাতায় যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.