শ্বাসনালীতে ছোট্ট বাঁশি আটকে ছটফট করছিল ৫ বছরের শিশুটি। হাসপাতালে পৌঁছে বাড়ির লোকজন জানতে পারেন, যে যন্ত্রের সাহায্যে ওই বাঁশি গলা থেকে বার করা যেতে পারে তা নেই। শুনে সকলে ভেঙে পড়েন। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের এক চিকিৎসক রাধেশ্যাম মাহাতো নিজের ব্যক্তিগত ‘ক্লিনিক’ থেকে ওই যন্ত্র হাসপাতালে আনিয়ে শিশুটির গলা থেকে বাঁশিটি বার করে দেন। মঙ্গলবার রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুটির নাম রেহেনা। তার বাড়ি অসমের ধুবুরিতে। মঙ্গলবার সকালে খেলার সময়ে বাঁশিটি ঢুকে যায়। নানা জায়গায় ঘুরে বাড়ির লোকজন রেহেনাকে নিয়ে রাতে শিলিগুড়ি হাসপাতালে যান। চিকিৎসকের উদ্যোগে মেয়ে সুস্থ হওয়ায় সকলেই খুশি। এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, আগামী দিনে একই সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে কোনও রোগী গেলে সে ক্ষেত্রে কী হবে? ওই চিকিৎসক যদি বাড়ি থেকে ফের যন্ত্র আনতে রাজি না-হন তা হলে রোগীর কী হবে? এমনকী, চিকিৎসক কোনও কারণে গরহাজির থাকলে ওই ধরনের পরিষেবা মিলবে কি না? শিলিগুড়ি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রণজিৎ ভকত বলেন, “এন্ডোস্কোপ যন্ত্র আমাদের হাসপাতালে নেই। তাই ওই ধরনের রোগী এলে মেডিক্যাল কলেজে রেফার করানো হয়। যন্ত্র না-থাকলে আগামী দিনেও ‘রেফার’ করা ছাড়া উপায় কী?” এ ক্ষেত্রে ওই চিকিৎসক ব্যক্তিগত ক্লিনিক থেকে যন্ত্র আনিয়ে পরিষেবা দিলেন কেন? হাসপাতাল সূত্রের খবর, কোচবিহার থেকে ‘বিশেষ পরিচিত’ একজনের অনুরোধে ওই চিকিৎসক যন্ত্র আনিয়ে বাঁশিটি বার করে দিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি শিলিগুড়ি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ মিলেছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, বিধায়ক তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যও এ ধরনের সমস্যার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এন্ডোস্কোপ কেন শিলিগুড়ির মতো গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে থাকবে না? আমি মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তার সঙ্গে কথা বলব।” শিলিগুড়ি বিধায়ক রুদ্রনাথবাবুও সমস্যার সমাধানের জন্য উদ্যোগী হবেন বলে বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়েছেন। |