বাউড়িয়া স্টেট জেনারেলের পরিষেবা নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ
নামেই স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। অথচ, পরিষেবার মান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চেয়েও খারাপ বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের। দিনের পর দিন পরিস্থিতি না পাল্টানোয় বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে বিস্তর ক্ষোভ জমেছে স্থানীয় বাসিন্দা, রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের মনে।
পরিকাঠামোর অভাবের জন্য যে পরিষেবা ঠিক ভাবে দেওয়া যায় না তা মেনে নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছেন, অপারেশন থিয়েটার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। নেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, অ্যানাস্থেটিস্ট এবং শল্য চিকিৎসক। ফলে, অস্ত্রোপচার চালু করা যাচ্ছে না। নেই এক্স-রে এবং প্যাথলজি বিভাগ। মেলে না ইসিজি পরিষেবাও। ৯ জন চিকিৎসকের জায়গায় রয়েছেন মাত্র চার জন। কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ১৪ জন নার্সের প্রয়োজন থাকলেও রয়েছেন মাত্র ৯ জন। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও অপ্রতুল। দু’জন ফার্মাসিস্ট অবশ্য রয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ওষুধ মেলে না বলে অভিযোগ রোগীদের।
এই অবস্থাতেই চলছে হাওড়ার বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। যার পরিষেবার মান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের থেকেও নিম্ন মানের বলে অভিযোগ রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-স্বজনের।
অথচ, স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে, মর্যাদার দিক থেকে মহকুমা হাসপাতালের ঠিক নীচে এবং গ্রামীণ হাসপাতালের উপরে রয়েছে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। বাউড়িয়া স্টেট জেনারেলে যে পরিষেবা ও পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
২০০০ সালের গোড়ায় ময়লাপুকুরে হাসপাতালটি চালু হয়। প্রথমে বহির্বিভাগ, পরে অর্ন্তবিভাগ চালু হয়। হাসপাতালটি ৫০ শয্যার। মহিলা ও পুরুষদের জন্য রয়েছে পৃথক ওয়ার্ড। প্রসূতিদের জন্য রয়েছে স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রসূতিদের উলুবেড়িয়া হাসপাতাল বা হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সমস্যা রয়েছে অন্য রোগীদের ক্ষেত্রেও। যেটুকু পরিকাঠামো রয়েছে, তারও সদ্ব্যবহার হয় না বলে অভিযোগ।
সাফাইকর্মীর অভাবে হাসপাতাল চত্বর কার্যত নরককুণ্ড। পাশেই রয়েছে চিকিৎসক ও কর্মীদের আবাসন। কিন্তু গুটিকয়েক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্স ছাড়া এই আবাসনে কেউ থাকেন না। অনেকে এর জন্য নিরাপত্তার অভাবকে দায়ী করেছেন।
সম্প্রতি আবার এই হাসপাতালের সুপার ঈশ্বর চট্টোপাধ্যায়কে একই সঙ্গে উলুবেড়িয়া হাসপাতালের সুপার হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব বহন করতে হচ্ছে। ফলে, তিনি বাউড়িয়া স্টেট জেনারেল নিয়মিত আসছেন না বলে অভিযোগ। ঈশ্বরবাবু বলেন, “এই হাসপাতালে কাজ খুব কম। পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা কিছুই নেই। সপ্তাহে দু’দিন আমি যাই। এতে কোনও অসুবিধা হয় না। তবে, পরিকাঠামো উন্নত করার কথা স্বাস্থ্য দফতরে বহুবার জানিয়েছি।”
বাউড়িয়া এবং সাঁকরাইল থানা এলাকার বহু রোগী এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। বহির্বিভাগে দৈনিক ১৫০-২০০ জন করে রোগী আসেন। পরিকাঠামো এবং পরিষেবার মান উন্নত হলে হাসপাতালটি বহু মানুষের উপকারে লাগবে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক দেবকুমার নন্দন বলেন, “হাসপাতালের কিছু আপৎকালীন প্রয়োজন রোগী কল্যাণ সমিতি মেটাতে পারে। কিন্তু পরিকাঠামোগত বিষয়টি দেখবে স্বাস্থ্য দফতর।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বিষয়টি তাদের নজরে রয়েছে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। হাসপাতালে অব্যবস্থা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.