নজরে ২০১৪
বিনামূল্যে ওষুধ-চিকিৎসা সকলকে, ঘোষণা কেন্দ্রের
প্রথম ইউপিএ জমানায় চালু হয়েছিল একশো দিন কাজ। ‘আম আদমি’-র সামাজিক সুরক্ষা বাড়াতে দ্বিতীয় দফার সরকারে আরও একটি বড় পদক্ষেপ করলেন মনমোহন সিংহ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় আজ জানিয়েছে, সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে দেশের সবাইকে বিনামূল্যে ওষুধ জোগাতে এক প্রকল্প চালু হবে অচিরেই। সব সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা হবে একেবারে বিনামূল্যে। কী কী ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হবে, তার তালিকা তৈরি করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এবং এক লপ্তে সেই সব ওষুধ কেনার জন্য শীঘ্রই একটি কেন্দ্রীয় সংস্থাও গড়বে তারা।
পাঁচ বছরের মধ্যে এই প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্য নেওয়া হলেও, ২০১৪-র লোকসভা ভোটের আগেই যাতে এর বেশ খানিকটা সুফল ‘আম আদমি-র কাছে পৌঁছায় সে দিকেই জোর দিচ্ছেন মনমোহন। যে কারণে দ্বাদশ যোজনায় স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দ গড় জাতীয় উৎপাদনের আড়াই শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে কেন্দ্রের এ-ও বক্তব্য, স্বাস্থ্য পরিষেবা যে-হেতু রাজ্যেরও দায়িত্ব, তাই তাদেরও বরাদ্দ বাড়াতে হবে এই খাতে।
কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার গঠনের পর থেকে সনিয়া গাঁধী বারবারই ‘আম আদমি’-র সামাজিক সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। একশো দিনের কাজ প্রকল্প রূপায়ণের পর গত লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ‘অপ্রত্যাশিত’ ভাল ফল করায় এ ব্যাপারে আরও উৎসাহী হয়ে ওঠেন কংগ্রেস হাইকমান্ড। তাই ইউপিএ-র দ্বিতীয় মেয়াদে খাদ্যসুরক্ষা আইন প্রণয়নে গুরুত্ব দেন সনিয়া-রাহুল। কিন্তু সেই আইন সংসদে পাশ হওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা। এ দিকে দুর্নীতি থেকে শরিক অসন্তোষ নিত্য নতুন সমস্যায় জেরবার হচ্ছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে আর একটি মোক্ষম জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের আশা, ২০১৪-এর ভোটে এই প্রকল্প নিঃসন্দেহে কংগ্রেসের অনুকূলে ইতিবাচক অনুঘটকের কাজ করবে।
মনমোহন-সনিয়ার এই কৌশল আঁচ করেই বিজেপি আজ তড়িঘড়ি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের মুখপাত্রের কথায়, “মনমোহনের পদক্ষেপে মনে হচ্ছে সরকার ভোট এগিয়ে আনতে পারে।” কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি তার জবাবে বলেছেন, “ইউপিএ সরকার আম আদমি-র সুরাহাকেই অগ্রাধিকার দেয়। সেটাই সরকার ও কংগ্রেসের ঘোষিত নীতি। বিজেপি-র সমস্যা হল, সবেতেই ওরা রাজনীতি খোঁজে।”
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পাশাপাশি আজ প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়েও স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। সেখানে যে প্রস্তাবগুলি স্থির হয়েছে, তা হল:
সব প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও জেলা হাসপাতালের আধুনিকীকরণ,
অ্যাম্বুলেন্স বাড়ানো,
ওষুধের মান ও তা কেনার ক্ষেত্রে অনিয়ম রুখতে ড্রাগ কন্ট্রোল আইন আর কঠোর করা,
ডাক্তার-নার্স-চিকিৎসাকর্মী বাড়াতে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান গঠন, যে সংস্থা স্থির করবে আরও কত নার্সিং ও মেডিক্যাল কলেজ দরকার,
স্বাস্থ্য প্রকল্প রূপায়ণে কেন্দ্র জনস্বাস্থ্য ক্যাডার বা স্বাস্থ্য ম্যানেজার নিয়োগ এবং
স্নাতক স্তরে বিজ্ঞান শাখায় তার কোর্স চালু করা।
কংগ্রেস হাইকমান্ডের মতে, এই ধরনের সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পই দিনের শেষে রাজনীতির হাওয়া ঘুরিয়ে দিতে পারে। যে কারণে ইতিমধ্যেই তিনি জেলা স্তরে কমিটি গড়ে দিয়েছেন প্রকল্পটির রূপায়ণে নজর রাখতে। তাঁর লক্ষ্য দু’টি। এক, রাজ্য স্তরে যাতে প্রকল্পটির ঠিক মতো রূপায়ণ হয়। দুই, মানুষও যেন জানতে পারেন যে, এর নেপথ্যে রয়েছে কংগ্রেসের ‘হাত’।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.