আই এফ এ শিল্ড থেকে মোহনবাগান সরে যাওয়ার দিনেই ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত দিতে শুরু করলেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। বুধবার অনুশীলনের পর ক্লাব অন্ত প্রাণ সবুজ তোতা বলে দিলেন, “মোহনবাগান সমর্থকদের ক্লাব। তাঁদের কথা ভেবেই কর্তাদের টিম করতে হয়। আমিও একজন পেশাদার ফুটবলার। আমারও আমার পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। আমাকে রাখা হবে কি না জানি না। তবে আমি আরও দু’তিনবছর খেলতে চাই।”
এ বছর খেলেই ব্যারেটো বুট তুলে রাখবেন এই ভাবনা থেকেই তাঁকে সম্মান জানাতে অধিনায়ক করে দিয়েছিলেন ক্লাব কর্তারা। কিন্তু তিনি আরও ‘দু’ তিনবছর’ খেলতে চান শুনেই ক্লাব তাঁবুতে গুঞ্জন। টি ডি সুব্রত ভট্টাচার্য এখনও পরের মরসুমের টিমের তালিকা দেননি। জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে নতুন মরসুমের চুক্তি না হলে তা দেবেনও না।
কোচ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং টেকনিক্যাল কমিটির দু’জন সদস্য অবশ্য কাদের রাখা উচিত এবং কাদের নেওয়া উচিত তা জানিয়ে দিয়েছেন। আই লিগ এবং কলকাতা লিগের কয়েকটি ম্যাচ এখনও খেলতে হবে মোহনবাগানকে। মরসুম শেষ হতে এখনও কয়েকমাস বাকি। সে জন্যই সেই তালিকা প্রকাশ করতে চাইছেন না কর্তারা। তবে ক্লাব সূত্রের খবর, কারও তালিকাতেই ব্যারেটোর নাম নেই। সেটা হয়তো ব্যারেটোর কানেও গিয়েছে। এ দিন সেজন্যই সম্ভবত ব্যারেটো সাংবাদিকদের বলে দেন, “আমি এ বছর খারাপ খেলিনি। পারফরম্যান্সে আমি খুশি।” ক্লাব কর্তাদের একাংশ অবশ্য যা শুনে বেশ বিরক্ত।
জানা গিয়েছে মোহনবাগান তাকে চতুর্থ বিদেশি হিসাবে না রাখলে গোয়ার কোনও দলে খেলতে পারেন ব্যারেটো। কারণ সেখানে বেটো এবং ব্যারেটো একটি ছোটদের ফুটবল অ্যাকাডেমি চালাচ্ছেন গত কয়েকবছর ধরে। সেটি আরও বড় করে করার ইচ্ছে বেটো-ব্যারেটো দু’জনেরই। সেক্ষেত্রে চার্চিল ব্রাদার্সে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে ব্যারেটোর। দল ছাড়ার প্রসঙ্গে সরকারিবাবে কি বলছেন মোহন অধিনায়ক? “এখনও অনেক সময় আছে। আমি আই লিগ নিয়েই শুধু ভাবতে চাই।”
এ দিকে, আই লিগ এবং কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়নের লড়াইতে থাকা মোহনবাগান আই এফ এ শিল্ড থেকে নাম তুলে নিল। রাজ্য সংস্থার কোনও টুর্নামেন্ট থেকে সরাসরি নাম তুলে নিলে শাস্তির মুখে পড়তে পারে ক্লাব। সে জন্যই ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র যে চিঠি এ দিন পাঠিয়েছেন তাতে অবশ্য সরাসরি না খেলার কথা লেখা নেই। লেখা হয়েছে, “টিমে চোট আঘাত রয়েছে। জাতীয় দলে আটকে আছে অনেক ফুটবলার। এই অবস্থায় টুর্নামেন্ট পিছিয়ে মে মাসে হলে আমরা খেলব।” এ দিন সকালে অনুশীলনের পর টিডি এবং কোচের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন কর্তারা। সেখানে সুব্রত বলে দেন, “১৪ জন ফুটবলার নেই। শিল্ড খেলব কি করে?” মোহনবাগান সরে দাঁড়ানোয় শিল্ড অবশ্য অনেকখানি জৌলুসহীন হয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন ফুটবলপ্রেমীরা। শেষ মুহূর্তে আই লিগের দু’টি দল মুম্বই এফ সি এবং হ্যালকে এনে ১২ দলের টুর্নামেন্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে আই এফ এ। তিনটি দলকে চারটি গ্রুপে ভাগ করে খেলানো হবে। ৩ মার্চ খেলা শুরু হবে। তার আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সূচি ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে প্রয়াত শৈলেন মান্নার স্মরণ সভার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে মোহনবাগানে। সেখানে প্রয়াত কিংবদন্তীর কন্যাকে আনার চেষ্টা হচ্ছে। আমন্ত্রণ জানানো হবে প্রাক্তন সব ফুটবলারকেই। |