হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার চার বছর পরেও রাজ্য সরকার এসপ্ল্যানেড থেকে বাস টার্মিনাস সরানোর কোনও প্রকল্প তৈরি করতে না পারায় উষ্মা প্রকাশ করলেন বিচারপতিরা। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষ এবং মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার নির্দেশ দেয়, বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকার কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের জানাতে হবে।
সাদা মার্বেলে তৈরি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের শুভ্রতা অক্ষুণ্ণ রাখতে ও কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৭-এ হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তার একটিও কার্যকর করেনি রাজ্য। সে নির্দেশে বলা হয়েছিল ধর্মতলা থেকে বাস টার্মিনাস সরাতে হবে, পিজি হাসপাতাল থেকে হো চি মিন সরণির মোড় পর্যন্ত অবাধ ট্রাফিকের ব্যবস্থা করতে হবে, ভিক্টোরিয়ার তিন কিলেমিটারের মধ্যে খোলা জায়গায় উনুন জ্বালানো বন্ধ করতে হবে এবং ওই ঐতিহাসিক সৌধের পাশ দিয়ে ভারী লরি চলাচল বন্ধ করতে হবে। এর কোনওটিই এখনও কার্যকর হয়নি।
বাস টার্মিনাস সরানোর কোনও পরিকল্পনা হয়েছে কিনা, জানতে চায় হাইকোর্ট। সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় সে প্রসঙ্গে এ দিন জানান, রিপোর্ট এখনও তৈরি হয়নি। তবে আজ, বৃহস্পতিবারই তিনি মুখ্যসচিব ও পরিবহণ সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছবেন। তবে তার জন্য কোনও জায়গা ঠিক হয়নি। বিচারপতি অশোকবাবুকে বলেন, তাঁরা যেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তর সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর সুপারিশগুলিও শোনেন এবং বিবেচনা করেন।
কলকাতা হাইকোর্টে সুভাষবাবুর দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল বুধবার। সেখানে সুভাষবাবু জানান, চার বছর আগে হাইকোর্ট ধর্মতলার বাস টার্মিনাস তিন মাসের মধ্যে সরানোর নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেও রাজ্য সরকার বাস টার্মিনাস সরানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভিক্টোরিয়ার পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে অবাধ যান-চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে কলকাতা পুলিশের তদানীন্তন কমিশনার হলফনামা দিয়ে হাইকোর্টকে জানিয়েছিলেন। সেটিও কার্যকর হয়নি। সুভাষবাবু জানান, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও সেগুলি বন্ধ করার ব্যাপারে কিছুই করেনি রাজ্য। বিচারপতি এ দিন সুরেন্দ্রনাথ পার্ক থেকে ট্রাম কোম্পানির বাস টার্মিনাসও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। |