তিন সঙ্গী ধরা পড়ে গিয়েছে ১১ দিন আগেই। কিন্তু পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কাদের খান এবং তার অন্য দুই সঙ্গী এখনও অধরা।
ওই অভিযুক্তদের খোঁজে গত ১১ দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এবং দেশের অন্য বেশ কয়েকটি বড় শহরে অভিযান চালিয়েছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। অভিযুক্তেরা যাতে বিদেশে পালাতে না-পারে, সেই জন্য বিমানবন্দরগুলিতে ‘লুক আউট’ নোটিস বা বিশেষ সতকর্তার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু ফেরার অভিযুক্তদের ব্যাপারে কার্যত কোনও সূত্রই মেলেনি। তা হলে কি পার্ক স্ট্রিটে ধর্ষণের যে-ঘটনা নিয়ে কলকাতা-সহ রাজ্যে ও অন্যত্র তোলপাড় চলছে, মাঝপথে তার তদন্ত থমকে গিয়েছে?
গোয়েন্দা অফিসারেরা অবশ্য দাবি করছেন, তদন্ত চলছে আগের মতোই। তবে পুলিশকর্তারা এই ব্যাপারে আর আগের মতো মুখ খুলছেন না। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কাদের এবং তার সঙ্গীদের নিকটাত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের উপরে নজর রাখা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ঘটনাটির রেশ একটু থিতিয়ে গেলেই আত্মীয়বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে ফেরার কাদেররা। তখনই তাদের জালে ফেলা সম্ভব হবে।
গোয়েন্দারা ফেরার অভিযুক্তদের ধরার ব্যাপারে আশাবাদী হলেও পুলিশের একাংশ মনে করছে, বড্ড বেশি তাড়াহুড়ো করেই সুমিত বজাজ, নাসির এবং রুমান থানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ওই তিন জনকে গ্রেফতার করার খবর দ্রুত পৌঁছে যায় কাদেরদের কাছে। এবং তার পরেই তারা গা-ঢাকা দেয়। গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করেছেন, ওই তিন অভিযুক্ত চিহ্নিত হওয়ার পরে তাদের উপরে কড়া নজর রাখা উচিত ছিল পুলিশের। তড়িঘড়ি গ্রেফতার করার বদলে ওই তিন জনকে ছেড়ে রেখে নজরদারি চালালেই বেশি কাজ হত। ইতিমধ্যে সন্ধান মিলত কাদেরদেরও। তখন পুরো দলটিকেই একসঙ্গে গ্রেফতার করা যেত বলে ওই পুলিশকর্তাদের অভিমত।
পুলিশ মনে করছে, সঙ্গীদের গ্রেফতারের খবর পেয়ে কাদেররা রীতিমতো আট ঘাট বেঁধেই গা-ঢাকা দিয়েছে। এমনকী তাদের কাছে নগদ টাকাও যথেষ্ট রয়েছে। তাই ব্যাঙ্কের এটিএমের উপরে নজরদারি চালানো সত্ত্বেও তাদের সন্ধান মেলেনি। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “আমরা আপাতত কাদেরকে ধরার উপরেই জোর দিচ্ছি। কাদেরকে ধরতে পারলে বাকিদের ‘ফেরার’ দেখিয়েও চার্জশিট পেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।”
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, দুষ্কৃতীদের সন্ধান চালানোর সঙ্গে সঙ্গেই ধৃত সুমিত বজাজের গাড়ি থেকে কিছু চুল সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ওই চুলের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে বলে জানান গোয়েন্দারা। অভিযোগকারিণী ওই গাড়িতে ছিলেন কি না, তা যাচাই করার ক্ষেত্রে ওই পরীক্ষার রিপোর্ট কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে জানিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। |