নিজস্ব সংবাদদাতা • জামুড়িয়া |
সাধারণ ধর্মঘটের দিন পুরসভা না খোলা থাকায় যুব তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন জামুড়িয়ার সিপিএমের পুরপ্রধান। তাঁকে ধাক্কাধাক্কিও করা হয়। ভাস্করবাবু অবশ্য পুলিশের কাছে এ নিয়ে কোনও অভিযোগ করেননি। তাঁর বক্তব্য, “পুলিশের উপস্থিতিতেই আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়। পুলিশ নিজেই অসহায়। তাদের কাছে আর কী অভিযোগ করব!”
স্থানীয় সূত্রে দেখা যায়, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ পুরভবনের বাইরের গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন যুব তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় কিছু সমর্থকও। আধ ঘণ্টা পরে পুরপ্রধান সেখানে পৌঁছলে বাইরের গেটের কাছে তাঁকে আটকানো হয়। এই সময়ে জনা সাতেক পুলিশকর্মী পুরপ্রধানকে ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারই মধ্যে বিক্ষোভকারীরা তাঁকে গালিগালাজ করতে থাকে। পুলিশের বেষ্টনী ভেঙে ভাস্করবাবুকে ধাক্কা মারা হয়। এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেই তিনি পুরভবনের সামনে পৌঁছন। ভবন বন্ধ ছিল। পুরসভার অন্য কর্মীরা অফিসের বাইরেই দাঁড়িয়েছিলেন। এক কর্মীর কাছ থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে ভিতরে ঢোকেন ভাস্করবাবু। ওই সময়েই উপ-পুরপ্রধান মানিক মণ্ডল ভিতরে ঢুকতে গেলে বাইরের গেটের কাছে তাঁকেও ধাক্কা মেরে বের করে দেওয়া হয়। |
অফিসে ঢোকার মুখে ধাক্কা পুরপ্রধানকে। বুধবার জামুড়িয়ায় ছবিটি তুলেছেন ওমপ্রকাশ সিংহ। |
এ দিকে, পুরপ্রধানের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর চেম্বারে ঢোকেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা দাবি করতে থাকেন, ধর্মঘটের দিন না আসার জন্য প্রত্যেক কর্মীকে ‘শো-কজ’ করতে হবে। ভাস্করবাবু অবশ্য বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী ‘ডিরেক্টরেট অফ লোকাল বডি’ কোনও নির্দেশ দিলে তা মানা হবে। তা ছাড়া আর কারও কথা আমি মানতে বাধ্য নয়।” এর পরেই বিক্ষোভকারীরা পুরসভার অফিস ছেড়ে যান।
পুরপ্রধান তথা সিপিএম নেতা ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমরা পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জানাইনি। কারণ, আমাদের মনে হয়েছে, বেষ্টনী করে আমাকে পুরভবনে পৌঁছে দিতে চাইলেও এ দিনের ঘটনায় পুলিশের নিজের অসহায়তা ফুটে উঠেছে। চাইলেও তারা কাজ করতে পারছে না। তাই তাদের কাছে অভিযোগ করে আর কী হবে?”
মঙ্গলবারই নাজিমা বেগম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জামুড়িয়া থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন, সে দিন পুরসভায় ব্যক্তিগত কাজে গিয়ে কারও দেখা পাননি তিনি। যুব তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অভিজিৎ ঘটকের অভিযোগ, “ধর্মঘটের দিন পুরসভা খোলা না থাকায় অনেক সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষের এমন করা ঠিক হয়নি।” তবে এ দিন তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা পুরপ্রধানকে হেনস্থা করেছেন, এমন খবর জানা নেই বলেই তাঁর দাবি। জামুড়িয়ার পুলিশ জানায়, তারা নিজেদের কাজ করেছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দেওয়া হয়নি। কোনও লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি।
এ দিন অন্ডালের মধুসূদনপুর কোলিয়ারির এজেন্টকে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অফিসে ঢুকতে না দিয়ে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন আইএনটিটিইউসি-র সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, বন্ধের দিন এজেন্ট এ কে নায়েক অফিসে আসেননি। তাই উৎপাদন হয়নি। জবাব চেয়ে এ দিন বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। শেষ পর্যন্ত এজেন্ট ভবিষ্যতে এমন ঘটবে না প্রতিশ্রুতি দিলে ঘেরাও ওঠে। এজেন্ট বলেন, “যাতায়াতের অসুবিধার জন্য আসতে পারিনি।”
এ দিন রানিগঞ্জ থানায় সিটু-র তরফে একটি স্মারকলিপি দিয়ে অভিযোগ করা হয়, মঙ্গলবার বাসস্ট্যান্ডে তাদের অফিসে জোর করে পতাকা লাগিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। |