তামিলনাড়ুর রাজ্য পরিবহণ সংস্থার মডেলকে সামনে রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে উত্তরবঙ্গ রাস্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি) কর্তৃপক্ষ। বুধবার কোচবিহারে পরিচালন বোর্ডের বৈঠকে ‘তামিলনাড়ু মডেল’ সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তামিলনাড়ু পরিবহণ সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি ওই রাজ্যে প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহণ সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক ছিলেন। নিগমের বিভিন্ন ডিপো ঘুরে দেখার কাজ তিনি শুরু করেছেন। সংস্থা সূত্রের খবর, তাঁর পরামর্শ মেনেই পরীক্ষামূলকভাবে ২০টি টিকিটিং মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২৫ কিমি দূরত্বের নির্দিষ্টরুটে তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহণ সংস্থার একটি বাস প্রতিদিন ৮ বার যাতায়াত করে। সেখানে এনবিএসটিসি’র বাসগুলি একই দূরত্বে দিনে ৪ বারের বেশি কেন যাতায়াত করতে পারছে না তা নিয়ে আলোচনা হয়। তামিলনাড়ুর ওই পরিবহণ সংস্থার কেন্দ্রীয়ভাবে অ্যাকাউন্ট, যন্ত্রাংশ কেনা, টিকিট পরীক্ষার পদ্ধতি, ডিপোভিত্তিক অতিরিক্ত কর্মী না রাখা থেকে পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার রাখার মত বিভিন্ন বিষয়ও বৈঠকে উঠে আসে। |
এর পরেই তামিলনাড়ু মডেল নিয়ে সকলে একমত হন। তেল সাশ্রয়, খরচ কমানো, বাসে ও টিকিটের পেছনে বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় বাড়ানো, কর্মীদের সঠিকভাবে দায়িত্ব বন্টনের মত বিষয়েও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এনবিএসটিসি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহণ সংস্থার পদক্ষেপগুলি বুঝে এখানেও কাজে লাগাতে চাইছি। ওই সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত এক আধিকারিক কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদলও এপ্রিল মাসে তামিলনাড়ু যাবেন।” এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সি মুরুগণ ওই আধিকারিককে কোচবিহারে আনার ব্যবস্থা করেন। এরজন্য ওই আধিকারিক কোনও পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না। এনবিএসটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলেন, “তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহণ সংস্থা বিভিন্ন কারণে লাভজনক হয়ে উঠেছে। ওঁদের মডেল ধরে এগিয়ে যেতে পারলে আমরাও আর্থিক সাশ্রয় করে লাভ করব বলে আশাবাদী।” বোর্ডের কিছু সদস্য জানান, সংস্থার ১০০ জন চালক ও কর্মী নিজেরাই শারীরিক সমস্যার জন্য অবসর নিতে আগ্রহী বলে এমডিকে জানান। বোর্ড সদস্যদের বাসে টিকিট যাচাইয়ের ক্ষমতাও অনুমোদন করা হয়েছে। পরিচালন বোর্ডের বৈঠক না ডেকে ঠিকাদারনিযুক্ত কর্মীসংখ্যা কমানো ও ডিপো কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশ নিয়ে বোর্ড সদস্যদের একাংশ বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন। দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর পরে নিগম কর্তারা রাজ্য সরকারে ছয়মাসের সময়সীমার মধ্যে আর্থিক হাল ফেরানোর নির্দেশের কথা জানান। এদিনের সভায় মিহির গোস্বামী, আবদুল জলিল আহমেদ প্রমুখ বোর্ড সদস্য উপস্থিত ছিলেন। |