নয়া নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবি
তৃণমূলের সম্মেলনের জন্য ছুটি মিলেছিল গত মাসেই
গামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের দিনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ছুটি নিতে পারবেন না বলে নির্দেশিকা জারি করলেও গত মাসে তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনের সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য কিন্তু ছুটি মঞ্জুর করেছিল সরকার। সরকারি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এতে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। মঙ্গলবার মুখ্যসচিবের জারি করা নির্দেশিকা নিয়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে তোলপাড়ের মধ্যে এই ছুটি মঞ্জুরের বিষয়টি সামনে এসে পড়ায় বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
সরকারি কর্মীদের মধ্যে তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী সংগঠনের নাম ‘স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশন (ইউনিফায়েড)’। গত মাসের ১৮ থেকে ২১ তারিখ মহাজাতি সদনে ওই সংগঠনের রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মহাকরণ থেকে জেলা পর্যন্ত প্রায় সব স্তরের সরকারি কর্মীদের মধ্যে থেকে ১৫০০ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের সদ্য নির্বাচিত মুখ্য পরামর্শদাতা সুব্রত চাকী। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় জাহাজ দফতরের প্রতিমন্ত্রী মুকুল রায়। চার দিনের সম্মেলনে হাজির ছিলেন অর্থমন্ত্রী, নগরোন্নয়নমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী-সহ আরও অনেক মন্ত্রী।
সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনের কথা জানিয়ে সরকারকে চিঠি দেন। তার ভিত্তিতে অর্থ দফতর নির্দেশিকা জারি করে। সেই মতো সম্মেলনে আগত সরকারি কর্মী প্রতিনিধিরা তাঁদের নিজের নিজের দফতর, ডিরেক্টরেটের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে ছুটির আবেদন করেন। অর্থ দফতরের নির্দেশিকা মতো তাঁদের জন্য ‘বিশেষ ছুটি’ (স্পেশাল লিভ) মঞ্জুর করা হয়। এর অর্থ, সম্মেলনে যোগদানকারী সরকারি কর্মীরা ‘বিশেষ ছুটি’-র দিনগুলিতে সবেতন ছুটি পাবেন। সুব্রতবাবু বলেন, “সম্মেলনের জন্য উত্তরবঙ্গ থেকে আগত প্রতিনিধিদের জন্য ৬ দিন এবং রাজ্যের বাকি অংশের প্রতিনিধিদের জন্য ৪ দিন ‘বিশেষ ছুটি’ মঞ্জুর করা হয়েছিল।”
একটি সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনের জন্য মাসখানেক আগে সরকার ‘বিশেষ ছুটি’ মঞ্জুর করলেও বামেদের ডাকা ধর্মঘটের দিন কাজে না-এলে কেন ছুটি মঞ্জুর করা হবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসনের বক্তব্য, সরকারি কর্মীদের যে কোনও সংগঠনের সম্মেলন হলে তাতে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের জন্য ‘বিশেষ ছুটি’ মঞ্জুর করার বিধান আগে থেকেই চালু আছে। তাই আলাদা করে শুধু তৃণমূল প্রভাবিত ফেডারেশনের জন্য জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, বন্ধ, ধর্মঘটের দিন কাজে না-এলে ছুটির আবেদন এবং তা মঞ্জুর করার বিধানও তো এত দিন চালু ছিল। তবে এ বারেই কেন হঠাৎ তার পরিবর্তন করা হল? এর জবাবে মুখ্যসচিব সমর ঘোষ শুধু বলেন, “এটাই এখন সরকারের অবস্থান।”
ধর্মঘটের দিন হাজিরার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশিকার প্রতিবাদ এবং তা প্রত্যাহারের দাবি এ দিনও উঠেছে। মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে নির্দেশিকার কঠোর প্রতিবাদ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। চিঠিতে তিনি বলেছেন, নির্দেশিকায় ছুটি মঞ্জুর না-করা সংক্রান্ত যে বাক্যটি রয়েছে, তার বিকল্প ভাবা হোক। প্রদীপবাবুর মতে এই বিকল্প হল, যে সব সরকারি কর্মী ব্যক্তিগত অথবা কোনও বিশেষ জরুরি কারণে ওই দিন কাজে যেতে পারবেন না, বিধি অনুযায়ী তাঁরা ছুটির আবেদন করতে পারবেন। আইএনটিইউসি অনুমোদিত কর্মী সংগঠন ‘ফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ’-ও মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে ওই বাক্যবন্ধ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
প্রদীপবাবুর আশঙ্কা নিয়ে মুখ্যসচিব এ দিন বলেন, “আগেই বলা হয়েছে বিশেষ কারণে কেউ সে দিন অফিসে আসতে না পারলে যদি আবেদন করেন তা হলে সরকার ‘কেস টু কেস’ বিবেচনা করবে।” কিন্তু ছুটির বিকল্প হিসেবে কি পদক্ষেপ করবে সরকার? জবাবে সমরবাবু বলেন, “যা নিয়ম আছে তার যে কোনও একটা প্রয়োগ করা হতে পারে। আবেদনপত্র জমা পড়লে তখনই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.