|
|
|
|
কৃষি ঋণ শোধের নির্দেশ সমবায়ের, বিপাকে চাষিরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাশীপুর |
ধান কেনা শুরু করেনি সমবায় সমিতি। এর মধ্যেই সেই সমবায় সমিতি থেকে পুরনো কৃষি ঋণ আদায়ের নোটিস আসায় বিপাকে পড়েছেন কাশীপুর ব্লকের তিন চাষি। ফড়ের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করা ওই চাষিরা কৃষি ঋণ মকুব করার জন্য এখন প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। কাশীপুরের বিডিও রাজীব ঘোষ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় রাঙ্গামাটি-রঞ্জনডি পঞ্চায়েতের. বেলিয়াডাঙ্গা ও রাঙ্গামাটি গ্রামের তিন চাষি অশোক তিওয়ারি, বাদল নায়েক ও রামসেবক দুবের অভিযোগ, “ধান কিনছে না স্থানীয় সমবায় সমিতি। ফলে কিছু ধান অভাবি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। তার উপরে তিন বছরের পুরনো ঋণ সুদ সমেত শোধ করার জন্য সমবায় সমিতি নোটিস পাঠিয়েছে। ওই টাকা শোধ করব কী ভাবে? তাই ওই ঋণ মকুব করার জন্য ওই সমবায় কর্তৃপক্ষ ও বিডিও এবং জেলাশাসককে লিখিত ভাবে অনুরোধ জানিয়েছি।
স্থানীয় ও সমবায় সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোক তিওয়ারি ২০০৮ সালে স্থানীয় কৃষি সমবায় সমিতি থেকে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী হিসাবে মোট ৩৪,৮০০ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। বাদল নায়েক স্বল্প মেয়াদী ঋণ নিয়েছিলেন ১৭,৫০০ টাকা, আর রামসেবক দুবের ঋণের পরিমান ১০,৫০০ টাকা।.ওই চাষিরা জানান, ঋণ নিয়ে চাষ করেও ওই বছর আশাজনক ফলন হয়নি।.তাঁদের অভিযোগ, ওই বছর ধান বিক্রির জন্য সমবায় সমিতিতে নিয়ে গেলেও সমিতি ধান কেনেনি। রামসেবকবাবুর অভিযোগ, “সমবায় সমিতি নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ধান কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছিল।” অশোকবাবু বলেন, “সেবার সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি না করতে পেরে আমরা ফড়েদের কাছে কম দামে অভাবি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলাম।.ফলে ধান বিক্রি করেও ঋণের টাকা উঠে আসেনি। পরের বছর মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে বীজ বুনেছিলাম। কিন্তু সে বার খরা হওয়ায় চাষই হয়নি।”
সমবায় নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, অশোকবাবুকে সুদ-সহ ৫০,৩৭০ টাকা শোধ করতে হবে। বাদলবাবুকে ২৪,৪২২ টাকা এবং রামসেবকবাবুকে ১৪,৩৬০ টাকা দিতে হবে। ওই চাষিরা বলেন, “এ বছর ভাল চাষ হলেও সমবায় সমিতি এখনও ধান কেনা শুরু করেনি। কাছাকাছি চালকলও নেই। তাই সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছিনা। এ বছরেও অভাবি বিক্রি করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় পুরনো ঋণের টাকা শোধ করা সম্ভব নয়।” রাঙ্গামাটি-রঞ্জনডি কৃষি সমবায় সমিতির সম্পাদক নগেন মহান্তি বলেন, “ধান কিনতে আগ্রহী জানিয়ে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও ধান কেনা শুরু করা যায়নি। তবে ২০০৬ সালে কৃষি ঋণ মকুব করার সরকারি নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু ২০০৮ সালের কৃষি ঋণ মকুব করার নির্দেশ নেই। তাই ওই চাষিদের ঋণ মকুব করা এখন সম্ভব নয়।” কাশীপুরের বিডিও বলেন, “ওই চাষিদের আর্জি খতিয়ে দেখা হবে। তবে ঋণ মকুব করা সরকারি নীতির ব্যাপার। আমাদের কিছু করার নেই।” তিনি জানান, মঙ্গলবার থেকে কাশীপুর ব্লক সদরে ধান কেনা শুরু হয়েছে। সেখানে ওই চাষিরা ধান বিক্রি করতে পারেন।” |
|
|
|
|
|