তিন যুবকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বুধবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানার রানাঘাটা গ্রামের কাছে দেহগুলি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা থানায় খবর দেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তিন জনকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের নাম পিয়ার আলি শেখ (৩৮), বাহার আলি শেখ (৩৬) ও মতিন খান (২৮)। এঁদের মধ্যে মতিন ও পিয়ার আলি শেখের বাড়ি মথুরাপুরেরই লালপুর গ্রামে। বাহার আলি জয়নগরের সীমানা গ্রামের বাসিন্দা। তিন জনের বিরুদ্ধেই অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, “নিহত তিন জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় সমাজবিরোধী কাজের অভিযোগ রয়েছে। কে বা কারা তাদের খুন করেছে, সে ব্যাপারে তদন্ত করছে পুলিশ।” যদিও নিহতদের পরিবারের তরফে অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। |
মথুরাপুরে নিহত পিয়ার আলির শোকার্ত পরিবার। ছবি: দিলীপ নস্কর |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পিয়ার আলি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রাট ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন মতিন। কিন্তু দু’জনের কেউই আর সে রাতে বাড়ি ফেরেননি বলে তাঁদের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে। এ দিন সকালে লালপুর গ্রাম থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে একটি খালের সেতুর উপরে তাঁদের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামের মানুষ। পাশেই পড়ে ছিল বাহার আলি শেখের মৃতদেহও। সম্পর্কে তিনি পিয়ার আলির শ্যালক।
পুলিশ জানায়, লালপুর গ্রামের একেবারে শেষপ্রান্তে পিয়ার আলির বাড়ি। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার। প্রতিবেশীরা জানান, কখনও দিনমজুরি, কখনও ভ্যানরিকশা টানার কাজ করতেন পিয়ার আলি। স্ত্রী আয়েশা বিবি বলেন, “আমার স্বামী কোনওরকম দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। কোনওদিন আমাদের বাড়িতে পুলিশ আসেনি। আগের দিন সন্ধ্যায় একটু আসছি বলে বাড়ি থেকে বের হন। তার পরে আর কোনও খোঁজ ছিল না। এ দিন সকালে লোকের মুখে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি স্বামীর মৃতদেহ পড়ে আছে। পাশেই পড়েছিল দাদার মৃতদেহও। জয়নগর থেকে দাদা এখানে কী করতে এসেছিল তা বুঝতে পারছি না।” একই কথা জানিয়েছেন মতিনের পরিবারের লোকেরাও। লালপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শেখ রাজ্জাক হালদার বলেন, “পিয়ার আলি ও মতিন খান দিনমজুরের কাজ করতেন। অসামাজিক কাজের সঙ্গে ওরা যুক্ত এমন কথা শুনিনি।” |