রাজ্য সরকার এতদিন ধরে যে কী বিপুল পরিমাণ টাকার রাজস্ব খুইয়েছে তা আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল বুধবার তেহট্ট মহকুমা প্রশাসন ভবনে আয়োজিত প্রকাশ্য নিলামে। জলঙ্গি নদীর উপরে তেহট্টের সেই ফেরিঘাটের সর্বোচ্চ দাম উঠল ১৯ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। নিলামে সর্বোচ্চ এই দাম দিয়ে ঘাট কিনলেন তেহট্টের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা বিধান বিশ্বাস। মহকুমা প্রশাসনসূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন আগে তেহট্টের ফেরি ঘাটের প্রকাশ্য নিলামের ব্যাপারে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো এদিন নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ছয় জন ওই নিলামে হাজির হয়েছিলেন। তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলাশাসক যে মনিটরিং কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন, সেই কমিটির কাছেই ওই টাকা থাকবে। নদীর দু’পারের উন্নয়ন ও যাত্রীদের আরও ভাল পরিষেবা দেওয়ার কাজে ওই টাকা খরচ করা হবে।’’
তেহট্টের এই ঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল বিতর্ক। বুধবারের এই নিলামের পরে সেই বিতর্কের অবসান হল বলেই মনে করছে মহকুমা প্রশাসন। সর্বোচ্চ ওই দর দিয়ে যিনি ঘাট কিনলেন সেই বিধান বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘সামান্য কিছু রাজস্ব দিয়ে এতদিন এক সমবায় সমিতি ওই ঘাট দখল করেছিল। তার প্রায় দ্বিগুণ অর্থ ১৪ লক্ষ ৬ হাজার টাকা দিয়ে মাস কয়েক আগে আমরা একবার এই ঘাট কিনেছিলাম। কিন্তু নানা কারণে সে বার আমরা ঘাটের দখল পাইনি। এবারও এই নিলামে শেষপর্যন্ত আমরাই জিতে গেলাম। অনেকদিন ধরে এই লড়াইটা করে আসছিলাম। আশা করছি খুব শীঘ্র এবার আমরা ঘাটের দখল পেয়ে যাব।’’
অন্য দিকে এতদিন যাদের দখলে ছিল তেহট্টের ওই ফেরিঘাট, সেই তেহট্ট থানা ফেরিঘাট পাটনি উন্নয়ন সমবায় সমিতির সম্পাদক দীপককুমার সরকার এদিন বলেন, ‘‘ আমরাও ওই নিলামে অংশগ্রহণ করেছিলাম।’’
তবে মহকুমা প্রশাসনের একাংশ মনে করেন যে, এই প্রথম প্রকাশ্য ও নিয়মমাফিক নিলামে ঘাটের যে দাম উঠেছে সেই নিরিখে দেখতে গেলে গত কয়েক বছরে সরকার অন্তত লক্ষ টাকা নয়, আসলে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব খুইয়েছে। |