হাতে গোনা আর কয়েকটা মাত্র দিন। তারপরে বৈষ্ণবতীর্থ নবদ্বীপ মেতে উঠবে দোল উৎসবে। শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রার দিনেই চৈতন্যদেবও জন্মেছিলেন বলে মনে করেন ভক্তেরা। মঠ-মন্দিরে তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দেড়শোরও বেশি ছোট বড় মন্দির সেজে উঠছে পুষ্প আভরণে, নতুন করে অঙ্গরাগ তৈরি হচ্ছে বিগ্রহের। ঝকঝক করছে নাটমন্দির, সুসজ্জিত মন্দির প্রাঙ্গণ তকতক করছে। ধূপ-অগুরু চন্দন গোলাপের গন্ধে সুরভিত সারা এলাকা। চলছে নামকীর্তন। হাজার হাজার মানুষের ভোগের জন্য চলছে নিখুঁত ব্যবস্থার উদ্যোগ।
কিন্তু এটা উৎসবের একটা দিক। পাশাপাশি আর একটা দিক রয়েছে। মন্দিরের পরিচ্ছন্ন পাঁচিল ঘেরা নিকানো প্রাঙ্গণের বাইরে জমে উঠেছে যাবতীয় আবর্জনা। এঁটো পাতা। পচা ফুল। ভাঙাচোরা মাটির থালা, গ্লাস। কয়েক হাজার এঁটো পাতা কখনও পড়ে রয়েছে রাস্তার উপরে ডাঁই করে। দুর্গন্ধে ওই এলাকায় পা দেওয়াই দায়। এলাকাবাসী নাকে রুমাল চাপা দিয়ে থাকছেন।
নবদ্বীপের কেন্দ্রস্থল পোড়া মা তলা। প্রতিদিন কাকভোরে পোড়া মা প্রাঙ্গণের যাবতীয় ফুল বেলপাতার আবর্জনা ফেলা হয় বাজার রোডের উপরে। রবিবার পুরসভার সাফাই অভিযান বন্ধ থাকে। ফলে রবিবার দিনভর ওই রাস্তা পড়ে থাকে ওই ভাবেই। তার মধ্যে সেই দিনই শহরে পর্যটকের ভিড় বেশি হয়। নবদ্বীপের উপপুরপ্রধান তুষার ভট্টাচার্য বলেন, “পুরসভার ১০-১২টা ট্রাক্টর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোটা শহর চষে সাফ করছে। কিন্তু সংস্থাকর্তা বা গৃহস্থদের তো সতর্ক হতে হবে। তাঁদের তো একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। গাড়ি চলে যাওয়ার পরে তাঁরা আবর্জনা ফেললে কী করে চলবে?” তাঁর কথায়, “কিছু মঠ-মন্দির অতিরিক্ত জঞ্জাল হলে তার দায় নিজেরা বহন করেন। কিন্তু সকলে করেন না।”
নবদ্বীপ ব্যবসা কেন্দ্রও বটে। নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক উত্তম সাহা বলেন, “আমরা আবর্জনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও পরিকল্পনা সে ভাবে করিনি। তবে এ কথা সত্যি যে, পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নবদ্বীপ আরও পরিচ্ছন্ন হওয়া উচিত। এই ব্যাপারে নাগরিক থেকে পুরসভা সকলেরই উদ্যোগী হওয়া উচিত।” |