বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়
পরিকাঠামোয় সন্তুষ্ট নয় স্ট্যান্ডিং কমিটি
প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও কর্মী নেই। গ্রন্থাগারে নেই পর্যাপ্ত বই। এমনকী গ্রন্থাগারিকও নেই! বাংলা বিভাগে তালা! উচ্চশিক্ষা বিষয়ক বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির পরিদর্শনের সময়ে বুধবার এই হাল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের! কমিটির চেয়ারম্যান তথা বাংলার শিক্ষক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা বিভাগ দেখার ইচ্ছে থাকলেও তা পূরণ হয়নি।
এ দিন কমিটির ১২ জন সদস্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছিলেন। পরিদর্শনে বিশেষ সন্তুষ্ট হতে পারেননি তাঁরা। যা দেখলেন, যা শুনলেন, সব কিছুই রিপোর্ট আকারে রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেবেন কমিটির সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে কী কী প্রয়োজন, সে নিয়েও রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবেন বলে কমিটির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।
পরিদর্শনে স্ট্যান্ডিং কমিটি।
তাঁর কথায়, “পরিকাঠামোগত নানা সমস্যা রয়েছে। শিক্ষক ও কর্মীর সংখ্যাও অপ্রতুল। তারই মধ্যে সকলেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায়, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করব।” আর বাংলা বিভাগে তালার ব্যাপারে চেয়ারম্যানের আক্ষেপ, “আমি নিজে বাংলার শিক্ষক। তাই বাংলা বিভাগ দেখার আগ্রহ একটু বেশিই ছিল। আমাদের পরিদর্শনের কথাও আগে থেকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলার কোনও ছাত্রছাত্রী বা শিক্ষককে দেখতে পেলাম না। একটি ঘরে কেবল নাচ হচ্ছে দেখলাম। কোনও অনুষ্ঠানে সকলে গিয়েছেন নাকি অন্য কোনও কারণে বন্ধ, বুঝতে পারলাম না।”
প্রতিনিধি দলে বিধায়ক আবু হোসেন মণ্ডল, তরুণ নস্কর, অসীমা পাত্র, ব্রজমোহন মজুমদার-সহ বিধায়ক ও উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিক মিলিয়ে ১২ জন ছিলেন। সাড়ে ১২টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে প্রথমেই প্রশাসনিক ভবনে যান স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা। তার পর একে একে বিভিন্ন বিভাগে। রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, ভূগোল, ইংরেজি বিভাগ, গ্রন্থাগার ঘুরে দেখেন তাঁরা। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথাও বলেন। কথা বলার সময়েই জানতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন ‘নেই’-এরই রাজত্ব। সোসিওলজি বিভাগে মাত্র ২ জন শিক্ষক, গ্রন্থাগারে গ্রন্থাগারিক নেই, ছাত্রদের প্রয়োজনীয় বইও নেই গ্রন্থাগারে। কয়েক বছর ধরেই নেই গ্রন্থাগারিক, সেল্ফ ফিনান্সিং পাঠ্যক্রমে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে প্রচুর টাকা নেওয়া হয়, চুক্তিতে নিয়োগকারী শিক্ষকদের মাত্র ১৪ হাজার টাকা মাইনে দেওয়া হয়, যেখানে অন্যান্য জায়গায় ২১ হাজার টাকা মাইনে দেওয়া হচ্ছে! চেয়ারম্যান বলেন, “এই সব নানা সমস্যা রয়েছে।”
বন্ধ বাংলা বিভাগ।
পরিদর্শন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী, রেজিস্ট্রার রঞ্জিত ধর, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিটির সদস্যরা। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি জয়ন্ত কুণ্ডু ও ইন্দ্রাণী দত্ত চৌধুরীও কমিটির কাছে বিভিন্ন দাবি জানান। কলেজ শিক্ষকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে কমিটির সঙ্গে দেখা করেন দেবাশিস আইচ, তুহিন দাসেরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দুর্নীতি’র প্রসঙ্গও ওঠে। দূর-শিক্ষা বিভাগে দীর্ঘদিন অডিট না হওয়া, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে যে পরিমাণ অর্থ খরচ দেখানো হয়, তার থেকে কাজের গুণগত মান অনেক খারাপ হওয়া, গুটিকয় ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা ‘কুক্ষিগত করে রাখা’য় শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়া, এখনও কোর্ট ও কাউন্সিলের নির্বাচন না হওয়ার মতো নানা প্রসঙ্গ ও অভিযোগই ওঠে। স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা সব কিছুই লিপিবদ্ধ করেন।

নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.