পদক্ষেপের নির্দেশ বেলপাহাড়িতে
বৈঠক হচ্ছে না গ্রাম পঞ্চায়েতে
বেলপাহাড়ির দশটি-র মধ্যে ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে দীর্ঘ দিন ধরে মাসিক বৈঠক হচ্ছে না। হচ্ছে না ওই পঞ্চায়েতগুলির অন্তর্গত গ্রাম-সংসদগুলির সভাও। ফলে, উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য বিডিওকে নির্দেশ দিলেন জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক মুফতি সওকত সামিম। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত সোমবারই বিডিওকে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক। তাঁর বক্তব্য, “কিছু সমস্যা রয়েছে। সদস্যরা না আসার ফলে একাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতে নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে না। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” বেলপাহাড়ির বিডিও সর্বোদয় সাহা অবশ্য প্রশাসনিক চিঠির বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি।
শুধু বেলপাহাড়িই নয়, রাজ্যে পালাবদলের পরে পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের (যে জেলার বেশির ভাগ পঞ্চায়েতই সিপিএমের দখলে) বিভিন্ন এলাকার পঞ্চায়েতেই ‘অচলাবস্থা’ দেখা দেয়। বেশ কিছু পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েতের সদস্য এলাকাছাড়া হন। ফলে, পঞ্চায়েতগুলি ‘অচল’ হয়ে পড়ে। এর ফলে গ্রামবাসীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হয়। সিপিএমের বক্তব্য, তৃণমূল কর্মীদের সন্ত্রাসের জেরেই একাংশ পঞ্চায়েত সদস্য এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। সেই সময়ে তাঁদের নানা ভাবে ভয় দেখানো হয়। আবার তৃণমূলের অভিযোগ, উন্নয়নের কাজ ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ ব্যাহত করে নতুন রাজ্য সরকারের বদনাম করতেই এই ‘সাজানো অচলাবস্থা’।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এখন পরিস্থিতির কিছুটা ‘উন্নতি’ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলির অনেকগুলিতে ফের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। তবে ওই সূত্রই জানাচ্ছে, সম্প্রতি বেলপাহাড়ির পঞ্চায়েত উন্নয়ন আধিকারিক সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি পরিদর্শন করে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিকের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠান। সেই রিপোর্টেই জানা যায়, শিমুলপাল, কাঁকো, ভেলাইডিহা, এড়গোদা, হাড়দা ও শিলদা--এই ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা রয়েই গিয়েছে। নিয়মিত মাসিক বৈঠক কিংবা গ্রামসংসদ সভা--কোনওটাই হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন ধরেই এই পরিস্থিতি চলছে। এই রিপোর্ট পেয়েই নড়েচড়ে বসেন জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার জন্য তিনি বিডিওকে নির্দেশ দেন। গ্রাম পঞ্চায়েতে মাসিক যে বৈঠক হয়, সেই বৈঠকেই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত সদস্যরা তাঁদের মতামত জানান। আপাতত কী কী কাজ হবে, কোন কাজ শুরু করা আশু জরুরি--আলোচনায় এ সবই উঠে আসে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “মাসে এক বার বৈঠক না হলে যে উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে যাবে তা নয়। কিন্ত ওই বৈঠক হলে ভাল হয়। উন্নয়নের কাজে গতি আসে।” সাধারণ মানুষের অভিযোগ, শুধু বেলপাহাড়িরই নয়, জেলার আরও কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে দীর্ঘদিন ধরে বৈঠক হচ্ছে না। পঞ্চায়েত সদস্যরা আসছেন না। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এ ক্ষেত্রেও পদক্ষেপ করা উচিত। বেলপাহাড়িতে সব মিলিয়ে দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এর মধ্যে হাড়দা ও শিলদায় ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। বাকিগুলি ঝাড়খণ্ডী জোটের দখলে। ওই জোটের অন্তর্দ্বন্দ্বও পঞ্চায়েতগুলির অচলাবস্থার অন্যতম কারণ বলে স্থানীয় সূত্রের ব্যাখ্যা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “কিছু সমস্যার জন্যই কয়েকটি পঞ্চায়েতে নিয়মিত বৈঠক হচ্ছিল না বলে শুনেছি। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.