মৌচাকে চিল, স্কুলে হুল-আতঙ্ক
মৌমাছির নৃত্যে অনিশ্চিত মাধ্যমিক পরীক্ষা। স্কুলের বারান্দায় বাসা বেঁধেছে মৌমাছির দল। বারবার চাক ভাঙা হলেও পরদিন ফিরে আসে মৌমাছিরা আবার তৈরি করে ফেলে নতুন চাক। সেই পুরোনো জায়গাতেই। মধুর সন্ধানে সেখানে প্রায়ই হানা দেয় চিল। মৌচাকে বসে পা দিয়ে টেনে বার করে মধুর তাল, তার পরেই ডানা ঝাপটে আকাশে উড়ে যায় চিল। আর অশান্ত হয়ে ওঠে মৌমাছিরা। চাক থেকে বার হয়ে এসে ছাত্রছাত্রীদের কামড়ে দেয়। শিক্ষকদেরও তাঁরা মোটেও রেয়াত করে না। খড়কুটো জ্বালিয়ে ধোঁয়া দেওয়া, পেল্লায় চাকের সামনে মশালে আগুন দিয়ে ভয় দেখানো, কত কাণ্ডই না করা হয়েছে। কিন্তু বেলা গড়াতে না গড়াতেই তারা আবার এসে হাজির। শেষে খবর গেল বন দফতরের কাছে। গত মঙ্গলবার রাতে প্রশিক্ষিত বনকর্মীরা এসে বেজায় কসরত করে এক এক করে ১১টা মৌমাছির চাক ভেঙে মাটিতে ফেলে দেন। স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন সকলেই। কিন্তু কীসের কী? বুধবার সকাল হতেই দেখা গেল আবার ফিরে এসে নিমেষেই চাক তৈরি করে ফেলেছে মৌমাছির দল। বন দফতর জানিয়েছে, চেনা পথে বারবার ফিরে আসে মৌমাছির দল। ভাঙা বাসার চারপাশে ওড়াওড়ি তাদের। আগামী শুক্রবার থেকে স্কুলে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। মৌমাছিদের এই কাণ্ড অব্যাহত থাকলে কিছুতেই সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা হবে না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা। মৌমাছি নিয়ে নাজেহাল বন দফতরও। বৈকুন্ঠপুর ডিএফও ধর্মদেব রাই বলেন, “সাধারণত একটি মৌচাকে থাকার পরে মৌমাছির দল সেই রাস্তাটি চিনে রাখে। সেই কারণেই বারবার ফিরে আসে। ভাঙা বাসার আশেপাশে মৌমাছিরা ওড়ে। দুই তিনদিন পরে মৌমাছিরা ফিরে আসবে না বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। বনকর্মীদের নজর রাখতে বলেছি।” স্কুল কর্তৃপক্ষ এবার মৌমাছি তাড়াতে এবার দ্বারস্থ হয়েছে প্রশাসনের।
ছবি: সন্দীপ পাল।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক থেকে শুরু করে মহকুমা শাসক সকলের কাছেই বুধবার বিকেলে স্কুল কর্তৃপক্ষের আর্জি, যেভাবেই হোক মৌমাছিদের তাড়িয়ে দিন। না হলে মাধ্যমিক পরীক্ষাই পণ্ড হয়ে যাবে! ঘটনাটি বেলাকোবার মুদিপাড়া নগেন্দ্রনাথ হাই স্কুলের। মাস খানেক আগে স্কুলের দোতলা বারান্দায় পরপর ১১টি বড় মৌমাছির চাক তৈরি হয়। স্কুল চলাকালীন বারান্দা থেকে ক্লাসঘরে গিয়ে ছাত্র-শিক্ষকের আশেপাশে গুনগুন, কখনও দুই একজনকে হুল ফুটিয়ে দেওয়া, এমন ভাবেই চলছিল। হঠাৎই প্রবেশ ঘটে একদল চিলের। দিনের আলো ফোটার পরে যখন তখন ছো মেরে চিল এসে বসে স্কুলের বারান্দায়। আর মৌমাছির চাকের ভিতরে দু পা ঢুকিয়ে মধুর তাল নিয়ে চম্পট দেয়। তার পরেই ঝাঁকে ঝাঁকে বার হয়ে আসে ভয়ার্ত মৌমাছির দল। আর ক্লাসঘরে, মাঠে যাকেই পায় তার গায়ে হুল ফুটিয়ে দেয়। মৌমাছি-চিলের এমন টানাপোড়েনে গত ১৫ দিনে এক দিন স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একদিন বাধ্য হয়ে মাঠেই ক্লাস হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরেন্দ্র রায় বলেন, “আগুন দেওয়া, ধোঁয়া দেওয়া কত কি করা হল, কিন্তু সকাল বেলায় আবার সব মৌমাছি ফিরে আসে। শেষে বন দফতর সব চাক ভেঙে দিল। এদিন দেখি মৌমাছিরা ফের চাক তৈরি করেছে। আগামী শুক্রবার থেকে স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। এমন চললে তো পরীক্ষাই হবে না।” জলপাইগুড়ি সদর মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন, “খুবই সমস্যার কথা। বিডিওকে খোঁজ নিয়ে দেখতে বলছি।” স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক বলেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “মৌমাছির দল ছাত্র শিক্ষকদের কামড়াচ্ছে। ম্যাধমিক চলাকালীন কোনও পরীক্ষার্থীকে কামড়ালে কি হবে? চিল প্রায়দিনই সকালে দুপুরে আসে। পরীক্ষার দিন মৌমাছির চাকে চিল হানা দিলে আর রক্ষে নেই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.