জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র গড়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই নতুন এক বিষয়ে রাজ্যের অধিকার খর্বের অভিযোগ উঠল। অভিযোগটি তুলেছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে চিঠি লিখে তিনি জানিয়েছেন, রেল মন্ত্রক আধাসামরিক বাহিনীর হাতে পুলিশের ক্ষমতা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করে কার্যত রাজ্যের অধিকারেই হস্তক্ষেপ করছে।
রেল মন্ত্রকের অবশ্য বক্তব্য, সাধারণ মানুষের স্বার্থেই এই প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্যে স্টেশন চত্বরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে রাজ্য পুলিশ এবং জিআরপি। রেল মন্ত্রক তাদের অর্ধেক বেতন দেয়। আর চলন্ত গাড়িতে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকে রেল নিরাপত্তা কর্মী তথা আরপিএফ-এর হাতে। কিন্তু কোনও অপরাধ বা যাত্রী-হেনস্থা হলে জিআরপি এবং আরপিএফ একে অপরের দিকে দায়িত্ব ঠেলতে চায়। যাত্রী-স্বার্থে তাই একটি অভিন্ন বাহিনী তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে গোটা দায়িত্ব চলে আসবে আরপিএফ-এর হাতে। তার জন্য অবশ্য সংসদে আইন সংশোধন করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছিল। এখন দীনেশ ত্রিবেদীও সেই কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু রেলের এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মোদী আজ বলেন, “আইন সংশোধনের মাধ্যমে এই প্রথম আধাসামরিক বাহিনীর হাতে পুলিশের ক্ষমতা তুলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই চেষ্টা অসাংবিধানিক। জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র নিয়ে ইউপিএ সরকার ইতিমধ্যেই রাজ্যের এক্তিয়ারে হাত দিয়েছে, এ বার একই ধরনের আরও একটি চেষ্টা সামনে এল। এর ফলে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে যাবে। বিমানবন্দর বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য বাহিনীও তা হলে একই দাবি করবে।” এ বিষয়ে বিজেপি-র বক্তব্য, যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র গড়ার উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত বলে মনে করছেন, হুমকি দিচ্ছেন কেন্দ্রকে, তাঁর দলের অধীনে থাকা রেল মন্ত্রকই রাজ্যের অধিকার খর্ব করতে চাইছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মমতা অবশ্য বলেন, “আরপিএফ? ওটা তো রেলের বিষয়। আমি মন্তব্য করব না।” |