স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব ও আলফার এক নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণেই স্বামী-সন্তান-ঘর ছেড়ে আলফায় যোগ দিয়েছেন শিক্ষিকা জাহ্নবী মহন্ত রাজকোঁয়র। এমনটাই দাবি করছে পুলিশ।
ডিব্রুগড় জেলার নাহারকাটিয়া এম ই স্কুলের শিক্ষিকা জাহ্নবী দেবীর খোঁজ নেই গত সপ্তাহের সোমবার থেকে। তবে, ঘর ছাড়ার আগে ‘যাত্রার বুলনি’ (যাত্রার শুরু) শিরোনামে একটি চিঠি লিখে রেখে গিয়েছেন তিনি। ওই চিঠিতে স্পষ্টভাবে জাহ্নবী জানিয়ে যান, আলফায় যোগ দিয়ে অসমের জন্য লড়াই করা তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। সম্প্রতি আলফার আদর্শ ও কর্মপন্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। আলফার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। এই অবস্থায় স্বপ্ন পূরণের জন্যই তিনি ঘর ছাড়ছেন।
শিক্ষিকা তথা সুলেখিকা জাহ্নবী দেবীর এমন কাজে শ্বশুরবাড়ি ও বাপের বাড়ির লোকজন তো বটেই, বিস্মিত গোটা রাজ্যই। যখন, আলফার একের পর এক নেতা-কর্মী স্বপ্নভঙ্গের জেরে মূল স্রোতে ফিরে আসছেন, তখনই মূল স্রোতে থাকা গৃহস্থবাড়ির এক শিক্ষিকার এমন মনোভাব পুলিশকেও চমকে দিয়েছে। বছর চল্লিশের জাহ্নবীদেবীর সন্ধানে তল্লাশি অভিযান শুরু হলেও এখনও তাঁর সন্ধান মেলেনি। ইতিমধ্যে, জাহ্নবী দেবীর গৃহত্যাগ নিয়ে তাঁর স্বামী শান্তনুবাবুকেই দায়ী করছে জাহ্নবীর পরিবার। এমনকী প্রাথমিক তদন্তের পরে, পুলিশেরও ধারণা, স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের মানসিক দূরত্ব ও আলফার এক নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই শিক্ষিকা।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই স্বামী-স্ত্রী পৃথকভাবে বসবাস করতেন। আলফার প্রতি জাহ্নবীর দুর্বলতা ছিলই। তিনি আলফা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা করেন। এই ভাবেই আলফার সংগ্রামপন্থী এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে, পুলিশের ধারণা, সম্ভবত, আলফার সদর ঘাঁটিতে এখনও যেতে পারেননি জাহ্নবী। কারণ, পারিবারিক সূত্রে পুলিশ জেনেছে, তাঁর ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে। খাওয়াদাওয়ায় প্রচুর নিষেধাজ্ঞা। এই শরীরে, দিনের পর দিন হেঁটে, পাহাড়-জঙ্গল পার হয়ে, মায়ানমারের কাচিন প্রদেশে যাওয়া জাহ্নবী দেবীর পক্ষে অসম্ভব।
নিখোঁজ শিক্ষিকার খোঁজে অসম-অরুণাচল সীমান্তের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে সন্ধান চালাচ্ছে সেনা ও পুলিশ। |