দুই দফতরে তরজা
ফাইল-বিভ্রাটে হোমে নজরদার টিভি শিকেয়
দু’টি ঘরের মধ্যে ব্যবধান মাত্রই কয়েকশো ফুট। তবু এক মন্ত্রীর ঘর থেকে অন্য মন্ত্রীর ঘরে ফাইল পৌঁছল না আট মাসেও! ফলে শিকেয় উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন হোমে ক্লোজ্ড সার্কিট (সিসি) টিভি বসানোর পরিকল্পনা।
মহাকরণে ওই দু’টি ঘরের একটিতে বসেন নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। অন্য ঘরটি পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারের। সাবিত্রীদেবীর ঘর থেকে পাঠানো একটি ফাইল আট মাসেও নাকি সুদর্শনবাবুর ঘরে পৌঁছয়নি। সমাজকল্যাণ দফতর বলছে, ফাইল পাঠানো হয়েছে। পূর্ত দফতরের বক্তব্য, ফাইল আসেইনি। কোথায় গেল সেই ফাইল, সেটাই রহস্য।
কী ছিল সেই ফাইলে?
ফাইলটিতে ছিল সরকারি হোমগুলিতে ক্লোজ্ড সার্কিট টিভি বসানোর প্রস্তাব। সাবিত্রীদেবী জানান, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পরেই গত জুনে ২৮টি সরকারি হোমে সিসি টিভি এবং স্বয়ংক্রিয় সাইরেন বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, প্রায়ই ওই সব হোম থেকে ছেলেমেয়েরা পালিয়ে যায়। অথচ ঠিক কখন, কী ভাবে, কার সহায়তায় তারা পালাচ্ছে, তা জানার উপায় থাকে না। সম্প্রতি ঠিক যেমনটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের আনন্দ আশ্রম হোমের ক্ষেত্রে। সেখানে ন’জন বাংলাদেশি ছেলে আটক ছিল। সপ্তাহ দুয়েক আগে তাদের ন’জনই একসঙ্গে হোম থেকে পালিয়ে গিয়েছে। এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি। নজরদার টিভি থাকলে এই সব ক্ষেত্রে আবাসিকদের গতিবিধির উপরে চোখ রাখা যেত। পালানোর মনোভাব টের পেলে স্বয়ংক্রিয় সাইরেন তা জানিয়েও দিত।
সাবিত্রীদেবী জানান, এই কাজে পূর্ত দফতরের সহযোগিতা দরকার। তাই ফাইল পাঠানো হয় তাদের কাছে। কিন্তু পূর্ত দফতর জানিয়েছে, ফাইলটির খোঁজ মিলছে না। সাবিত্রীদেবী বলেন, “সুদর্শনবাবু পূর্তমন্ত্রী হওয়ার পরে বিষয়টি তাঁকে জানাই। তিনি ফাইলের মেমো নম্বর-সহ খুঁটিনাটি জানতে চান। সেই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য পাঠিয়ে দেওয়ার পরেও এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ফাইলটির হদিস নেই।”
রাজ্যের বিভিন্ন হোমে ৩৬৬৫ জন আবাসিক রয়েছেন বলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী জানান। হোমগুলি দু’ধরনের। একটি হল ‘জুভেনাইল জাস্টিস হোম’ বা জে জে হোম। এই সব হোমে শিশু ও কিশোর অপরাধীদের রাখা হয়। বিশেষ করে যাদের অপরাধের বিচার এখনও শেষ হয়নি। তবে বিচারাধীন শিশু অপরাধীদের সঙ্গে অপরাধী নয়, এমন ছেলেমেয়েদেরও রাখা হয়। মন্ত্রীর মতে, এটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়। কারণ, বিচারাধীন আবাসিকেরা অনেক সময়েই অন্য আবাসিকদের উপরে অত্যাচার চালায়। মারধর করে। এই ধরনের ১৮টি হোমে এখন আবাসিক রয়েছে দু’হাজারেরও বেশি। অন্য এক ধরনের হোম রয়েছে, যেখানে মূলত ভবঘুরে এবং অনাথদের রাখা হয়। ইদানীং এই দুই ধরনের হোম থেকেই আবাসিকদের পালানোর প্রবণতা বেড়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী জানান, সব দিক বিবেচনা করে তাঁর দফতর জুনের প্রথম সপ্তাহেই প্রতিটি হোমে সাইরেন ও সিসি টিভি বসানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল পূর্ত দফতরে। তখন পূর্তমন্ত্রী ছিলেন সুব্রত বক্সী। কিন্তু পূর্ত দফতরের দিক থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। কী হল ফাইলটির? পূর্তসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন বলেন, “বিভিন্ন হোমে সিসি টিভি ও সাইরেন বসানোর প্রস্তাব সংক্রান্ত ফাইল আমার কাছে আসেইনি। ফলে এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.