যে গাড়িতে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ, সেটি তার পরের কয়েক দিনে বেশ কয়েক বার ধোয়ামোছা হয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার ওই ‘হন্ডা সিটি’ গাড়িটি পরীক্ষার পরে তাঁরা সন্দেহ করছেন, সম্ভবত সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্যই অভিযুক্তেরা গাড়িটি এত বার ধুয়েছিল। কারণ তাঁদের মতে, ৫ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি এই মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে গাড়িটি যত বার ধোয়া হয়েছে, সাধারণ ভাবে তত ঘনঘন কোনও গাড়ি ধোয়ার দরকার পড়ে না। তবে ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে কথা বলার পরে পুলিশ মনে করছে, এখনও গাড়িটির ভিতর ও বাইরে থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতে পারে। সেই সূত্রগুলিই এই মামলার জট ছাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
গাড়ি পরীক্ষা করে ঠিক কী কী জানা গেল, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনও রিপোর্ট অবশ্য ফরেন্সিকের তরফে এখনও কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশকে জমা দেওয়া হয়নি। পরীক্ষার স্বার্থে গাড়িটির বেশ কিছু ছোটখাটো জিনিস বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ তুলে দেবে ফরেন্সিক কর্মীদের হাতে। পুলিশের ধারণা, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই ‘হন্ডা সিটি’র ভিতরে ঠিক কী ঘটেছিল, ফরেন্সিক রিপোর্ট পেলেই তা স্পষ্ট হবে। তবে রিপোর্ট জমা না পড়লেও পরীক্ষার পরে গাড়ির ভিতরে কয়েকটি ‘দাগ’ পাওয়া গিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে। সে সব দাগের সাহায্যেই বোঝা সম্ভব, কী ঘটেছিল গাড়িতে। গাড়ি ধুয়ে ফেলে অভিযুক্তেরা প্রমাণ লোপাটেরই চেষ্টা করেছিল কি না, ধৃতদের জেরা করে তা জানতে চাইছে পুলিশ। তদন্তকারীদের ধারণা, বারবার গাড়ির বাইরে-ভিতরে ধোয়ামোছা করা হয়েছিল আনাড়ি হাতে। সে কারণেই এখন বিভিন্ন রাসায়নিকের সাহায্যে ওই সব দাগ পরীক্ষা করা হলে এমন কিছু সূত্র মিলতেও পারে, যা তদন্তে সহায়ক হবে। এ ব্যাপারে আর বিস্তারিত বলতে চাননি তদন্তকারীরা। তবে পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ঘটনার রাত থেকে শুরু করে ১৪ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ওই গাড়িটি ধোয়া হয়েছিল।
ঘটনাচক্রে ‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র রাতেই প্রধান অভিযুক্ত কাদের এবং জনি কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে ইতিমধ্যেই তদন্তে জেনেছে পুলিশ। তাদের খোঁজে গোয়েন্দাদের একটি দল মুম্বইয়ে পাড়ি দিয়েও এখনও তেমন সুবিধা করতে পারেনি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। শুধু ওই দুই অভিযুক্তই নয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আরও এক যুবক তাদের সঙ্গে পালায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। কে ওই যুবক, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় পুলিশ। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, কাদের এবং জনি একসঙ্গেই রয়েছে। তৃতীয় ওই যুবক তাদের সঙ্গেই আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |