|
|
|
|
সংঘর্ষ রোধে ‘সরব’ নেতা খুন হলেন সংঘর্ষের জেরেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
২০০৯-এর পর থেকে বিধানসভার বিভিন্ন অধিবেশনের শুরুতে বাম-বিধায়কদের নিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বৈঠকে একাধিক বার রাজনৈতিক সংঘর্ষ এবং পুলিশের ‘ভূমিকা’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন প্রদীপ তা। সরাসরি বুদ্ধদেববাবুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কেন কড়া হাতে রাজনৈতিক সংঘর্ষ দমন করবে না পুলিশ? ঘটনাচক্রে তিনিও খুন হলেন রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরেই।
১৯৯৬ সালে বর্ধমান প্রদীপবাবুকে চিনত এলাকার ডিওয়াইএফ নেতা হিসেবে। পরে দলের এই সর্বক্ষণের কর্মীর সাংগঠনিক সিঁড়ি চড়া শুরু। এক সময় ওই সংগঠনের রাজ্য স্তরের নেতা হিসেবে স্বীকৃতি মেলে। স্বীকৃতি মিলেছিল শ্রমিক সংগঠন ‘সিটু’তেও। রাজ্য স্তর পেরিয়ে তিনি ‘সিটু’র সর্বভারতীয় নেতায় পরিণত হন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য হন ১৯৯৫ সালে। এলাকায় ‘ডাকাবুকো’ নেতা বলে পরিচিত প্রদীপ ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান উত্তর কেন্দ্রের প্রার্থী হন। জেতেন। তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বর্ধমান গ্রামীণ এলাকায় জেলার মধ্যে সব চেয়ে বেশি শিল্প গড়ে উঠেছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করতে শোনা যেত বছর আটান্নর এই সিপিএম নেতাকে। বলতেন, “এই শিল্পায়নের জন্যই আমরা এখানে অপরাজেয় হয়ে উঠেছি।” ওই আসনটি সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় গত নির্বাচনে আর লড়েননি প্রদীপবাবু। যদিও সে বারও ওই আসনে জয়ী হয় সিপিএম। সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্যে শাসক দল পরিবর্তনের পরে ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে বর্ধমান শহর লাগোয়া এলাকায় সংগঠন ধরে রাখাতে তাঁর ‘বিশেষ ভূমিকা’ ছিল। তবে সেই সঙ্গেই ছিল একাধিক ‘রাজনৈতিক’ মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ সংক্রান্ত বিতর্কও।
বছর তিয়াত্তরের কমল গায়েন অবশ্য দল এবং এলাকায় পরিচিত ‘অজাতশত্রু’ হিসেবে। কমলবাবু সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য হন ২০০১-এ। আদিবাড়ি বাঁকুড়াতে হলেও থাকতেন বর্ধমান শহরের সুভাষপল্লিতে দলের জেলা কমিটির আর এক নেতা অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। মাস দু’য়েক আগে পর্যন্ত দলের বর্ধমান সদর জোনাল কমিটির সম্পাদক ছিলেন কমলবাবু। শারীরিক কারণে তিনি অব্যাহতি নিতে ওই কমিটির সম্পাদক হন দলীয় নেতা মহবুব মণ্ডল। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গণেশ চৌধুরীর প্রশ্ন, “এমন বয়স্ক আর অজাতশত্রু একটা লোককে খুন করে কার, যে কী লাভ হল কে জানে!” দলের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদারের মন্তব্য, “প্রদীপবাবু এবং কমলবাবুকে হারানোর ক্ষতি অপূরণীয়।” |
|
|
|
|
|