নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
কেন্দ্রীয় সরকার শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িকে রাজীব গাঁধী আবাস যোজনার প্রথম পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করতে আশ্বাস দিয়েছে বলে জানালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। গত ২ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কুমারী শৈলজার লেখা চিঠি গৌতমবাবুর হাতে পৌঁছেছে। ওই চিঠি অনুসারে এ বার রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরে চিঠি দিয়ে উত্তরবঙ্গের এই দুটি জেলাকে রাজীব গাঁধী আবাস যোজনা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানাতে হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “রাজ্যের তরফে এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তার পরেই কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রেী কুমারী শৈলজা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়কে চিঠি দিয়ে জানান, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হলে এই দুটি শহরকে ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে রাজি আছেন। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে দ্রুত প্রস্তাব পাঠানো হবে।” জওহরলাল নেহরু আরবান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পে শিলিগুড়িকে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব না-হওয়ায় পূর্বতন বাম সরকারের আমল থেকেই শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়িকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এদিন অবশ্য দাবি করেন, “বামেরা কয়েকটি চিঠি লেখা ছাড়া কিছুই করেনি। ক্ষমতায় আসে আমরা এই ব্যাপারে উদ্যোগী হই। আশা করি, এ বার সেই সমস্যা মিটবে।” রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য গৌতমবাবুর ওই মন্তব্যকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “রাজীব গাঁধী আবাস যোজনা প্রকল্পে প্রাথমিক কাজকর্ম সব আমরাই করেছি। শহরের প্রাক্তন মেয়র এই ব্যাপারে কয়েক বার দিল্লিতে গিয়েছিলেন। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে কেবল বাকি কাজ করেছে। উপভোক্তারা টাকা জমা দেওয়ার পরেও বর্তমান পুরসভা আইএইচএসডিপি প্রকল্পেই ৭০০ বাড়ি তৈরির কাজ ফেলে রেখে দিয়েছে। গৌতমবাবুরা আগে সেই কাজ করে দেখান।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি ওই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হলে শহরের বস্তি এলাকার দরিদ্র বাসিন্দাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া ছাড়াও এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নেও অর্থ বরাদ্দ করা হবে। তবে এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও রাজ্য সরকারকেও অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। পাশাপাশি উপভোক্তাকেও আর্থিক দায় নিতে হবে। গৌতমবাবু বলেন, “উপভোক্তাকে কত টাকা দিতে হবে সেটা এখনই স্পষ্ট নয়। তবে আর্থিক দায়ভার বেশি হলে উপভোক্তা যাতে ব্যাঙ্ক ঋণ পান সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।” অতিরিক্ত আর্থিক দায় বহণ করতে হলে উপভোক্তারা আদৌ প্রকল্পটি নিয়ে উৎসাহী হবেন কি না সেই ব্যাপারেও সংশয় প্রকাশ করেন অশোকবাবু। এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তাঁর দফতরের বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি জানান, সার্কিট বেঞ্চের সীমানার পাঁচিল তৈরির মতো কয়েকটি কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। হাতিঘিষায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার আঞ্চলিক দফতর তৈরি, আদাবাড়ি ঘাটে মানসাই নদীর সেতু-সহ কয়েকটি কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি রায়গঞ্জ থেকে বারসই সড়কটির পশ্চিমবঙ্গের অংশ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে তৈরি করে দেওয়া হবে। বাকি কাজ করবে বিহার সরকার। বারসইয়ে দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপ বাড়ানো হবে। |