মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ফের মোট নম্বর ও মেধা-তালিকা চালু করার কথা বলেছিলেন। এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সোমবার, পরীক্ষা শুরু হওয়ার তিন দিন আগেও মার্কশিটে মোট নম্বর দেওয়া বা মেধা-তালিকা প্রকাশ করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদে এই নিয়ে আলোচনাও হয়নি। ফলে পরীক্ষার মুখে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ১৬ হাজার ৮১। গত বছরের থেকে হাজার দশেক বেশি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি চৈতালি দত্ত জানান, এ বারের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র চার লক্ষ ৯০ হাজার ৫৭৪ এবং ছাত্রী পাঁচ লক্ষ ২৫ হাজার ৫০৭ জন। গত কয়েক বছরে মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কখনও বেড়েছে ৪০-৫০ হাজার, কখনও বা লক্ষেরও বেশি। তা হলে এ বার সেই বৃদ্ধির হার এত কম কেন? চৈতালিদেবী বলেন, “ছাত্রছাত্রী বৃদ্ধির হার প্রায় সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। হয়তো সেই জন্যই এ বছর পরীক্ষার্থী বৃদ্ধির হার খুব বেশি হয়নি।”
বেশ কয়েক বছর হল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা-তালিকা প্রকাশ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মাধ্যমিকে মোট নম্বর উঠে গিয়েছে বছর তিনেক আগে। কিন্তু ২০১১-র মে মাসে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মমতা মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের সম্ভাব্য স্থানাধিকারীদের সংবর্ধনা জানান। সব বিষয়ে সর্বোচ্চ গ্রেড প্রাপকদের নামের তালিকাও প্রকাশ করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, নতুন সরকার কি তবে পিছনে হেঁটে পরীক্ষায় মোট নম্বর ও মেধা-তালিকা ফিরিয়ে আনতে চাইছে? তার পরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পরীক্ষায় মোট নম্বর ও মেধা-তালিকা ফেরানোর কথা বলেন তিনি। সেই অনুসারে উচ্চ মাধ্যমিকে এ বছর মোট নম্বর ও মেধা-তালিকা ফিরে আসছে। কিন্তু মাধ্যমিকে কী হবে, সেটা চূড়ান্ত না-হওয়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
পর্ষদ-সভাপতি বলেন, “মোট নম্বর ফেরার ব্যাপারে একটা কথা হচ্ছে, শুনেছি। তবে মোট নম্বর বা মেধা-তালিকা প্রকাশ নিয়ে পর্ষদে এখনও কোনও রকম আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।” এ বছরের মাধ্যমিক হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে। পরীক্ষা হবে সাতটি পত্রের। প্রশ্ন উঠেছে, যদি মার্কশিটে মোট নম্বর উল্লেখ করার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা হয়, তা হলে তাতে ‘অ্যাডিশনাল’ বা অতিরিক্ত বিষয়ের নম্বর যোগ হবে কি? সিদ্ধান্ত না-হওয়ায় পর্ষদের কেউই এর উত্তর দিতে পারেননি। পর্ষদ-সভাপতি শুধু জানান, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন নম্বরগুলি হল: ০৩৩-২৩৫৯২২৭৭, ০৩৩-২৩৫৯২২৭৮। সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই নম্বরে ফোন করা যাবে বলে জানান চৈতালিদেবী।
|
অস্থায়ী শিক্ষকদের বেতন বন্ধ নিয়ে অভিযোগ সূর্যের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
নতুন সরকার অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের নিয়মিত বেতন দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করল সিপিএম। সোমবার মহাজাতি সদনে এক কনভেনশনে এই অভিযোগ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এবং সিটুর রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ শ্যামল চক্রবর্তী। তাঁদের হুঁশিয়ারি, এ ব্যাপারে বিধানসভার বাইরে-ভিতরে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক স্কুল এবং কলেজ-শিক্ষকদের যৌথ সংগ্রাম কমিটি ওই কনভেনশনের আয়োজন করে। কনভেনশন থেকে সম কাজে সম বেতন-সহ সব রকম সুযোগ-সুবিধার দাবি তোলা হয়। সূর্যবাবু বলেন, “সময়মতো বেতন না পেয়ে কলেজ শিক্ষিকার আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। যা চলছে, তার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।” রাজ্যে এক লক্ষ ৬০ হাজার অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক আছেন জানিয়ে শ্যামলবাবু বলেন, “আপনারা যৌথ আন্দোলন গড়ে তুলুন। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া বাকি মন্ত্রীরা বোবা ও কালা। তাই আপনাদের কথা শুনছেন না। আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দাবি আদায় করতে হবে।” শিক্ষকদের অভিযোগ, বারবার শিক্ষামন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি। |