প্রশ্নের মুখে কিংবদন্তির ওয়ান ডে-ভবিষ্যৎ
অস্ট্রেলীয়দের সাহস নিলেই শুধু হবে না, সততাটাও নিতে হবে
কালে যখন জানলাম রিকি পন্টিংকে ত্রিদেশীয় সিরিজের বাকি ম্যাচ থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, তখন প্রথমে মনে হয়েছিল, এই সাহস আমরা দেখাতে পারতাম কি? কিন্তু যত ভাবছি তত মনে হচ্ছে, আমাদের সচিন তেন্ডুলকরকে যে বসাব, খেলাবটা কাকে? অস্ট্রেলিয়া পন্টিংকে বসানোর সাহস দেখাতে পেরেছে কারণ, ওদের ভাল বিকল্প এসে গিয়েছে। মাইকেল ক্লার্ক চোট সারিয়ে ফিরছে। শেন ওয়াটসন ফিরছে। ম্যাথিউ ওয়েড ভাল খেলছে। ডেভিড হাসি ভাল খেলছে। ত্রিদেশীয় সিরিজে একটাও দু’অঙ্কের রান না পাওয়া পন্টিংয়ের এখন সত্যিই অস্ট্রেলিয়া দলে জায়গা হয় না।
পন্টিং: ওয়ান ডে
থেকে বাদ
আর এটা তো বরাবরের অস্ট্রেলীয় মনোভাব। ওরা আবেগ-টাবেগে গা ভাসায় না আমাদের মতো। এই তফাতটা তো আছেই। কিন্তু বাস্তব সমস্যাটা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার নতুন প্রজন্ম এখনও টেস্ট ক্রিকেটমুখী। ওয়ান ডে ক্রিকেটমুখী। আর আমাদের নতুন প্রজন্ম মানে টি-টোয়েন্টি মনস্ক প্রজন্ম। আইপিএল খেলব, টাকা কামাব, ব্যস। টেস্ট ক্রিকেট খেলে নিজেকে সর্বোচ্চ মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করব এই জেদটাই নেই। টেস্ট ক্রিকেট তো দূরের ব্যাপার, ভারতের নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা এমনকী পঞ্চাশ ওভারের ওয়ান ডে নিয়েও ভাবে না। ভাবে কুড়ি ওভারের ক্রিকেট নিয়ে।
যাদের মধ্যে পুরনো সেই জেদি ঘরানাটা আছে তাদের আমরা মাঠের বাইরে বসিয়ে রাখি। অস্ট্রেলীয় নির্বাচক, টিম ম্যানেজমেন্ট বা ওদের ক্রিকেট প্রশাসকরা টিমের ব্যাপারে খুব সৎ। কারও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ সেখানে গুরুত্ব পায় না। ওদের দেশে এমন জিনিস কখনও হবে না যে, মনোজ তিওয়ারির মতো কেউ শেষ ম্যাচে সেঞ্চুরি করে বেঞ্চে বসে আছে। সবাই বুঝতে পারছে যে, এই ছেলের মধ্যে মশলা আছে। আর সুরেশ রায়না পঁচিশটা ম্যাচে টানা রান না পেয়েও খেলে যাচ্ছে। অজিঙ্ক রাহানের মতো প্লেয়ার বাইরে বসে থাকে না। ওদের ওখানে যে ভাল প্লেয়ার সেই খেলবে। ক্যাপ্টেনের কে কাছের লোক সেটা বিচার্য নয়। এখানে সেই সততা দেখানোর লোক যখন নেই, তখন হঠকারিতা করে সব সিনিয়রকে যেন এক ধাক্কায় সরিয়ে না দেওয়া হয়। আস্তে আস্তে সরাও।
আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়, বিরাট কোহলি অস্ট্রেলিয়ায় টেস্টে ভাল খেলে দেওয়ার পর লক্ষ্মণকে আর রাখা যাবে না। অস্ট্রেলিয়ার জন ইনভেরারিটির মতোই শ্রীকান্তের এ বার লক্ষ্মণকে বলার সময় হয়েছে, “ভারতীয় ক্রিকেটে তোমার অবদান অসাধারণ। দুর্দান্ত সব ইনিংস খেলেছ যা কেউ ভুলতে পারবে না। কিন্তু এ বার আমাদের সামনের দিকে তাকাতেই হচ্ছে। তাই...” কিন্তু দ্রাবিড় বা সচিনের জন্য আরও অপেক্ষা করা দরকার। যোগ্য বিকল্প তৈরি দেখলে তবেই এঁদের সরানোর কথা হোক।
ধোনির ওই সচিন-সহবাগ-গম্ভীর একসঙ্গে খেললে রান বেশি গলে যাচ্ছে মন্তব্যটাও অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। ওটা বলেই আবার যোগ করেছে, অন্য খারাপ ফিল্ডাররাও আছে। তা হলে ওদের নাম নিলে না কেন? নাকি সেই ‘অন্যরা’ তোমার বিশেষ পছন্দের বলে নাম নিলে না? আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তুমি যদি সচিন-সহবাগ-গম্ভীরের নাম নিতে পার তা হলে অন্যদের নাম নিলে না কেন? নাকি সেই অন্যরা তোমার বিশেষ পছন্দের বলে নাম নিচ্ছ না? প্রবীণ কুমার কবে দারুণ ফিল্ডার হয়ে গেল? রোহিত শর্মা যদি ভাল ফিল্ডারই হবে তা হলে দু’টো ক্যাচ ফেলল কী করে? ফিল্ডিং মাপকাঠি হলে জাহির খান কী করে খেলবে? অশ্বিন কী করে খেলবে? শুধু অস্ট্রেলীয়দের মতো সাহস দেখাতে গেলেই তো হবে না, ওদের মতো সৎ থেকে সাহস দেখাতে হবে!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.