তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের গোয়ালঘরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস-তৃণমূলের কাজিয়া শুরু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের বেড়াল গ্রামের। তৃণমূলের অভিযোগ, আগুন লাগানোর ঘটনার সঙ্গে জড়িতেরা কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থক। ১৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের তরফে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়েছে। হাওড়ার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “একটি বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। এক জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, যে পঞ্চায়েত সদস্যের গোয়ালঘরে আগুন লাগানো হয়েছে তাঁর নাম তপন দেয়াসী। ২০০৮ সালে তিনি কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হলেও বছরখানেক আগে যোগ দেন তৃণমূলে। তাঁর অভিযোগ, রবিবার বিকেলে কংগ্রেস কর্মীরা বেড়াল গ্রামে সমাবেশ করেন। ওই রাতেই ৯টা নাগাদ কয়েক জন কর্মী-সমর্থক তাঁর বাড়ির গোয়ালঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। গোয়ালঘরটি পুরোপুরি পুড়ে যায়। চারটি গরু আগুনে পুড়ে মারা যায়। তপনবাবু বলেন, “বিকেলে সমাবেশের পরে রাতে স্থানীয় এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে বসেই আমার গোয়ালঘরে আগুন লাগানোর চক্রান্ত হয়। আগুন লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি চিৎকার করে বাইরে বেরিয়ে আসি। অভিযুক্তদের চিনতেও পারি। তারা প্রত্যেকে কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থক।” তিনি জানান, তাঁর চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা বেরিয়ে আসেন। সকলে মিলে আগুন নিভিয়ে দেন। রবিবার সকালে তিনি জয়পুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আমতার তৃণমূল নেতা সেলিমূল আলম বলেন, “তপনবাবু কংগ্রেস ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিয়েছিলেন। সেই কারণে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তাঁকে নিয়মিত ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তাঁর বাড়ি-সংলগ্ন গোয়ালঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।”
অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের বক্তব্য, “রবিবার বিকেলে ওই এলাকায় যে কর্মী সমাবেশ হয় তাতে আমি হাজির ছিলাম ঠিকই। তবে সেখানে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়। তার পরে আমি চলে আসি। সোমবার সকালে শুনলাম একটা আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।” তাঁর দাবি, “আমাদের দলের কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করার জন্য উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে আমি পুলিশের কাছে দাবি জানিয়েছি। মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের দলের কাউকে গ্রেফতার করা হলে জোরদার আন্দোলন হবে।” |