প্রায় ৯ ঘণ্টা অবরোধের জেরে সোমবার হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হল।
একটি লোকাল ট্রেনের যাত্রাপথ বাড়ানোর ফলে তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন, এই অভিযোগে সোমবার বারুইপাড়া স্টেশনে ট্রেন আটকালেন যাত্রীরা। অবরোধকারীদের সঙ্গে মন্ত্রী ও পুলিশের আলোচনা, রেলের প্রতিশ্রুতি সবই বিফলে যায়। শেষ পর্যন্ত পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধ তোলে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে বিকেল ৫টা বেজে যায়। |
ঘটনার জেরে বিভিন্ন স্টেশনে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে যায় হাওড়া ও শিয়ালদহমুখী দু’টি রাজধানী এক্সপ্রেস-সহ ২১টি দূরপাল্লার এবং লোকাল ট্রেন। ৯টি ট্রেন বাতিল করা হয় বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। কয়েকটি ট্রেনকে হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই গুড়াপের মানুষ একটি ট্রেন চাইছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি রাখতেই ‘বারুইপাড়া লোকাল’-এর যাত্রাপথ বাড়ানোর পরিকল্পনা করে রেল। মুখ্যমন্ত্রী রবিবার হাওড়ায় ‘বারুইপাড়া লোকাল’-এর পরিবর্তে ‘গুড়াপ লোকাল’ চালু করার কথা ঘোষণা করেন।
এত দিন সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ বারুইপাড়া থেকে লোকাল ট্রেনটি ছাড়ত। সোমবার সেটি নাম পাল্টে ‘গুড়াপ লোকাল’ হয়ে কিছুটা আগে চলে এলেও ভিড়ের জন্য তাঁরা উঠতে পারছেন না, এই অভিযোগ তুলে বারুইপাড়ার যাত্রীরা অবরোধ শুরু করেন। তাঁরা ‘বারুইপাড়া লোকাল’ ফের চালানোর দাবি তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, বারুইপাড়া থেকে গুড়াপ ১১টি স্টেশন। অথচ, আগাম না জানিয়ে, যাত্রী-স্বার্থ না দেখে সরাসরি ট্রেনের যাত্রাপথ বাড়িয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ‘একতরফা’ ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। |
রেল পুলিশ এবং হুগলি জেলা পুলিশ তো বটেই, অবরোধকারীদের বোঝাতে ব্যর্থ হন কৃষিমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও। পূর্ব রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল অবরোধকারীদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জানান, আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। কিন্তু তাতেও রাজি হননি অবরোধকারীরা। প্রায় ৩ হাজার অবরোধকারীকে হটাতে এর পরে ৬টি থানার পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স, র্যাফ ঘটনাস্থলে যায়। তারা লাঠি চালিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। কিন্তু তা আগে কেন করা হল না এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অবরোধে আটকে পড়া বহু যাত্রী। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “অবরোধকারীদের বোঝানোর চেষ্টা হয়। সব চেষ্টা বিফলে যাওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষ আমাদের সাহায্য চান।”
|
সোমবার তাপস ঘোষের তোলা ছবি। |