রিপোর্ট পুলিশ কমিশনারকে
থানায় অপমানের নালিশ সত্যি, মত পুলিশি তদন্তে
তাঁর ধর্ষণের অভিযোগ যে ‘সাজানো’ নয়, পুলিশ তা মেনে নিয়েছে। পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের ধর্ষিতা মহিলার দ্বিতীয় অভিযোগটিও যে সম্পূর্ণ সত্য ছিল, এ বার তা-ও মেনে নিলেন পুলিশকর্তারা।
কী ছিল ওই অভিযোগ?
অভিযোগকারিণী জানিয়েছিলেন, ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার ছ’দিন পরে তিনি যখন এক আত্মীয়াকে নিয়ে ফের পার্ক স্ট্রিট থানায় যান, তখন থানার দুই অফিসার সৈকত নিয়োগী ও মণীশ সিংহ তাঁদের অপমানসূচক কথা বলেন। সংবাদমাধ্যমের চাপের মুখে ধর্ষণের অভিযোগের পাশাপাশি এই ‘দুর্ব্যবহারের’ অভিযোগ নিয়েও তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) সুপ্রতিম সরকারকে।লালবাজার-সূত্রের খবর: সোমবার বিকেলে সুপ্রতিমবাবু পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দার কাছে তাঁর তদন্ত-রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। এবং তাতে পরিষ্কারই বলা হয়েছে, মহিলার অভিযোগ ঠিক। ওই দুই পুলিশ অফিসার তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহারই করেছিলেন বলে রিপোর্টে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কী ভাবে তদন্ত চালানো হয়েছিল?
লালবাজারের এক অফিসার জানান, যুগ্ম কমিশনারের জেরার মুখে ওই দুই অফিসার বার বার দাবি করেছিলেন, তাঁরা নির্দোষ। এমনকী, তাঁদের সহকর্মীদের কাছ থেকেও অভিযোগের সমর্থনসূচক কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। সকলেরই বক্তব্য, মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই। উপরন্তু ঘটনার দিন, অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই মহিলা ও তাঁর আত্মীয়া বসেছিলেন থানার তদন্তকারী অফিসারদের ঘরে, যেখানে ক্লোজড সার্কিট টিভি-ক্যামেরা লাগানো নেই। পার্ক স্ট্রিট থানার অন্যত্র ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা থাকলেও ওই ঘরে তা বসানো হয়নি। কাজেই অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও ফুটেজের মতো অকাট্য তথ্য-প্রমাণও মেলেনি।
তা হলে মহিলার সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, সে সিদ্ধান্তে কী ভাবে পৌঁছানো গেল?
লালবাজার-সূত্রের খবর: যুগ্ম কমিশনারের রিপোর্ট অনুযায়ী, উল্লিখিত সময়ে থানায় উপস্থিত অন্যান্য পুলিশকর্মীর সঙ্গে তদন্তকারীরা বার বার কথা বলেছেন। কথা বলেছেন অভিযোগকারিণী ও তাঁর আত্মীয়ার সঙ্গেও। পারিপার্শ্বিক যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ থেকেই স্পষ্ট, ওই দুই সাব ইন্সপেক্টর তাঁদের সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ করেননি। এক পুলিশকর্তার কথায়, “এক জন মহিলা থানায় গিয়ে জানাচ্ছেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। বিব্রত, অসহায় মহিলাটির সঙ্গে যে সহানুভূতি-সমবেদনা নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল, দুই পুলিশ তা করেননি।”
পাশাপাশি পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারী মহিলা সৈকতবাবু ও মণীশবাবুকে আগে থেকে চিনতেন না। ওঁদের মধ্যে পুরনো শত্রুতাও ছিল না। কাজেই তিনি খামোকা কেন দুই অফিসারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলবেন, তদন্তের সময়ে সেই প্রশ্নটাও মাথায় রাখা হয়েছিল। তার উপরে থানায় সে দিনের ঘটনা সম্পর্কে মহিলা ও তাঁর আত্মীয়ার বয়ানেও কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি।
আর এমন সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্তকারীদের মনে হয়েছে, মহিলা সত্যি কথাই বলেছেন। তা হলে পার্ক স্ট্রিট থানার দুর্ব্যবহারকারী দুই অফিসারের বিরুদ্ধে এ বার কী ব্যবস্থা নেবে লালবাজার?
কলকাতা পুলিশের এক কর্তার মন্তব্য, “আমরা বলে থাকি, কলকাতা পুলিশ সব সময়ে নাগরিকদের পাশে রয়েছে। অথচ ওঁরা দু’জন যে কাণ্ড ঘটালেন, সে কলঙ্ক মুছতে সময় লাগবে। তাই ওঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।” এ ব্যাপারে সৈকতবাবু ও মণীশবাবুর প্রতিক্রিয়া জানার জন্য এ দিন বিকেলে ওঁদের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়। কিন্তু ওঁরা কেউ ফোন ধরেননি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.