গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ভেতরে এক কর্মীকে চড় মারার অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ভালুকা। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত অফিসে তালা ঝুলিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে নেমেছেন অফিসের কর্মীরা। ঘটনার জেরে ওই পঞ্চায়েতের কাজকর্ম শিকেয় ওঠায় বিপাকে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকালে কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যা রুরি বিবির স্বামী শেখ সামসুল কর্মী মহম্মদ আরিফকে চড় মারেন। এখনও পুলিশে অভিযোগ না জানালেও হলেও গোটা বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই কর্মী। তিনি কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্য হওয়ায় তার পাশে দাঁড়িয়েছে বামপন্থী ওই কর্মী সংগঠনও। চাঁচলের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বলেন, “যুগ্ম বিডিও এলাকায় গিয়েছেন। এদিন দুপুরেই ঘটনার কথা জানতে পেরেছি। সব খতিয়ে দেখে দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে তা দেখা হচ্ছে।” কর্মী বলেন আরিফ অভিযোগ করে জানান, পঞ্চায়েতে এসে ওই সদস্যার স্বামী তাঁকে কিছু কাজ করতে বলেন। তিনি বলেন, “ওই কাজ আমার নয় বলায় তিনি ক্ষেপে গিয়ে সপাটে চড় কষিয়ে দেন।” চড় মারার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শেখ সামসুল। তিনি বলেন, “কয়েকজনের বার্ধক্যভাতার অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কাগজপত্র নিয়ে পঞ্চায়েতে যাই। কিন্তু ওই কর্মী বলেন এটা আমার কাজ নয়। কাকে দিতে হবে বলতেই ওই কর্মী ঝাঁঝিয়ে বলেন যে তা আমি জানি না। আপনি খুঁজে নিন। কেন এরকম ব্যবহার করছেন বলায় তিনি আমাকে ধাক্কা দেন। রাগে চড় মারি। এরপর তো দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছি। তার পরও এদিন ফের তালা ঝোলানোর ঘটনা ঘটেছে কেন বুঝতে পারছি না।” পঞ্চায়েতটি কংগ্রেসের দখলে। অভিযুক্তের স্ত্রী তকংগ্রেস সদস্যা রুরি বিবি চড় মারার ঘটনায় স্বামীর বিরোধিতা করেন। পাশাপাশি পঞ্চায়েত কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “স্বামীর ওই কর্মীকে চড় মারা ঠিক হয়নি। তবে পঞ্চায়েত অফিসে কাজে যাওয়া লোকজনের সঙ্গে কর্মীদের একাংশ উদ্ধত আচরণ করেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। কর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যে মিথ্যা নয় তা গতকালকের ঘটনায় পরিষ্কার।” ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিজয় রায় বলেছেন, “ওই ভাবে চড় মারাটা অন্যায় হয়েছে। ঘটনার পর বসে বিষয়টির সমাধানও করে দেওয়া হয়। তার পরও কেন ওরা আন্দোলনের পথে গেল বুঝতে পারছি না।” ঘটনার প্রতিবাদে কো-অর্ডিনেশন কমিটি টানা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। সংগঠনের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক কমিটির সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, “অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্য়ন্ত আন্দোলন চলবে। যাই-ই ঘটুক না কেন দফতরে ঢুকে মারধর করলে কর্মীদের নিরীপত্তা কোথায়? প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।” |