ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হওয়ার প্রায় ৬ মাস পরে টাকা ফেরতের আশ্বাস পেলেন এক মহিলা গ্রাহক। মঙ্গলবার টাকা ফেরতের দাবিতে তৃণমূল শ্রমিক কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আন্দোলন শুরু হলে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের মাথাভাঙা শাখার ম্যানেজার ফণীভূষণ ডেকা টাকা ফেরতের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “টাকা তোলার স্লিপের সই জাল হয়েছিল। পুলিশি তদন্তে তা প্রমাণিত হয়েছে। গ্রাহকদের প্রতি দায়বদ্ধতা মেনেই আমরা ওই টাকা ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত করে কার গাফিলতিতে এমন হয়েছে তা দেখা হবে।” মাথাভাঙার শিকারপুর এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলার নাম অরুণি চৌধুরী। স্বামী পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক অর্জুন চৌধুরী গতবছর মারা যান। তাঁর বকেয়া পেনশন, গ্র্যাচ্যুইটির টাকা অরুণি দেবি নিজের অ্যাকাউন্টে জমা হয়। তার মধ্যে ২০১১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ২ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়। পাসবই আপ-টু-ডেট করাতে গিয়ে অরুণি দেবী জানতে পারেন। তাঁর অভিযোগ, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমল দিতে চায়নি। নিয়ম মেনে জমা দেওয়া তাঁর সই করা নির্দিষ্ট স্লিপ যাচাইয়ের পরেই টাকা দেওয়া হয়েছিল হয় বলে ব্যাঙ্কের তরফে দাবি করা হয়। তদন্তের দাবি জানায় আলিজার রহমানের নেতৃত্বে মাথাভাঙা তৃণমূল শ্রমিক কংগ্রেস। পুলিশ ঘটনার কিনারা করতে টাকা তোলার স্লিপে করা অরুণি দেবীর সই যাচাইয়ের জন্য হ্যান্ড রাইটিং এক্সপার্টের কাছে পাঠায়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাস বলেন, “হ্যান্ড রাইটিং এক্সপার্টের রিপোর্টে টাকা তোলার স্লিপের সই অরুণি দেবীর নয় বলে জানানো হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তাদের তা জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” মঙ্গলবার তদন্ত রিপোর্টের কথা জানাজানি হতেই ফের আলিজার রহমানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখিয়ে টাকা ফেরতের দাবিতে দিনভর ওই ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল শ্রমিক কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত টাকা সুদ-সহ ফেরানোর আশ্বাস দেন ব্যাঙ্ক কর্তারা। অরুণি দেবী বলেন, “আন্দোলনের জেরেই আজ টাকা ফেরত পাওয়ার আশা তৈরি হয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তারা আশ্বাস দেওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছি।” মাথাভাঙা মহকুমা তৃণমূল শ্রমিক কংগ্রেস নেতা আলিজার রহমান বলেন, “মানবিকতার কারণেই আমরা ওই গ্রাহকের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলনে নামি। সেটা সত্য প্রমাণ হওয়ায় ভাল লাগছে।” |