উত্তরবঙ্গের ৬জেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে এই আর্থিক বছরে যে কাজ করার কথা তা আগামী ৩১ মে’র মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। মঙ্গলবার হিলকার্ট রোডে দফতরের সদ্য উদ্বোধন হওয়া ভবনে আধিকারিকদের নিয়ে প্রথম বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “এই আর্থিক বছরে উন্নয়নের যে কাজগুলি চলছে তা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে। দফতর থেকে এই আর্থিক বছরে ৩৬১টি প্রকল্পের জন্য ৪৮ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাঁর মধ্যে অনেক কাজ শেষ হয়েছে। এখনও ২২৮ টি প্রকল্পের কাজ চলছে। মার্চের মধ্যেই এই সংখ্যাটা অনেক কমে যাবে। ৩১ মে’র পর এই আর্থিক বছরে করার কথা ওই সমস্ত প্রকল্পের কোনও কাজ অসমাপ্ত থাকুক চাই না।” |
এ দিন দফতরে ৬ জন বাস্তুকার যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার অমিত ঘোষ, এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নীহার কান্তি বিশ্বাস, সিভিল এবং ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সৌম্য ভট্টাচার্য, অশোক সরকাররা। দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, আরও ১৯ জন যোগ দেবেন। ২৪ জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নেওয়া হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেটের ধাঁচে এখানে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের দুই জন বাস্তুকারও রয়েছেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি তাঁদের নিয়ে ফের বৈঠক হবে। পরবর্তীতে জলপাইগুড়ি, বালুরঘাট বা মালদহে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের শাখা গড়ে তোলা হবে। এ দিন মন্ত্রী জানান, ছয় জেলায় ২৭টি প্রকল্পের কাজ পূর্ত দফতরকে করতে দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাজ এবং সার্কিট বেঞ্চের নতুন ভবন যেখানে তৈরি হবে সেই জায়গায় পাঁচিল দেওয়া, মাটি ভরাট করার কাজ দ্রুত শুরু করা হচ্ছে। স্পোর্টস কমপ্লেক্সের জন্য এই আর্থিক বছরে ২২কোটি টাকা দফতর থেকে দেওয়া হয়েছে। সার্কিট বেঞ্চের জন্য দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা। আইন দফতর থেকে ওই কাজের ক্ষেত্রে আপাতত বরাদ্দ মিলেছে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। পুরো প্রকল্পটি ৯২ কোটি টাকার। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে পাহাড়ে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজে এই আর্থিক বছরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ২০ কোটি টাকা দেবে বলে ঠিক হয়েছে। বিজনবাড়িতে সেতু তৈরির জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর দেবে। উন্নয়ন কাজের জন্য রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (আরআইডিএফ) এবং ব্যাক ওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ড ফান্ড (বিআরজিএফ) থেকে বরাদ্দ মিলবে। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের সাগরদিঘি এলাকায় মানসাই নদীতে সেতু তৈরির প্রকল্পটি ১০২ কোটি টাকার। তার মধ্যে ২কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা সেচ দফতর, ৬৮ কোটি টাকা দেবে পূর্ত দফতর। বাকি টাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর দেবে। শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর আলাদা সেক্রেটারিয়েট গড়ে তোলা হচ্ছে। কোথায় হবে তা শীঘ্রই চূড়ান্ত হবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন। তাই সেখানে তাঁর এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের থাকার ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে। পর্যটন দফতরকে ইতিমধ্যে ৬ কোটি ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। তা দিয়ে মূর্তি, জলদাপাড়া, হিলটপ, মর্গানহাউজে পর্যটনের একাংশ পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালের পরিষেবার মান উন্নয়নে সরঞ্জাম কিনতে স্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি টাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে দেওয়া হয়েছে। |