ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত হয়ে গেল ৫টি দোকান। সোমবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জ থানারোড এলাকায়। প্রায় ২ ঘন্টার চেষ্টায় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তদন্তে দমকলের ধারণা, শটসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর দমকল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়ীরা। রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত দমকলের বিরুদ্ধে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক ও জেলা পরিষদের সভাধিপতির কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সরকারি নিয়মে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। রায়গঞ্জ দমকলকেন্দ্রের ওসি নিতাইচন্দ্র মন্ডল বলেন,, “দমকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। দোকানগুলিতে দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। দোকানগুলির ফায়ার লাইসেন্স ছিল কীনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শটসার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল বলে জানতে পেরেছি।” উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসনের তরফে অগ্নিকান্ডের ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারও গাফিলতি প্রমাণ হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শোরুম ও কারখানা সহ তিনটি সোনার দোকান, পানমশলার একটি দোকান এবং একটি ষ্টেশনারি সামগ্রীর দোকান আগুন লেগে পুড়ে যায়। ষ্টেশনারি দোকানে অ্যাটাচি, প্রেসার কুকার সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ছিল। সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দমকল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জেরে আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। এদিকে আগুন লাগার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ওইদিন রাতে দুষ্কৃতীদের হামলায় জখম হয়েছেন একটি বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদ চ্যানেলের চিত্র সাংবাদিক। দুষ্কৃতীরা তাঁর ক্যমেরা ছিনিয়ে নিয়ে মাটিতে আছড়ে ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, ওই চিত্র সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে দুষ্কৃতীরা অবাধে লাথি ও ঘুষি মারে বলেও অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওইদিন গভীর রাতে প্রসূনবাবুকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি এই বিষয়ে রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। কী কারনে দুষ্কৃতীরা তাঁর ওপর হামলা চালাল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রায়গঞ্জ থানার আইসি আইসি সুবীর পাল বলেন, “ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” আগুন লাগার খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন মোহিতবাবু, জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ বিশ্বাস, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতা অরিন্দম সরকার ও তিলক চৌধুরী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী প্রমথনাথ রায়। মোহিতবাবু বলেন, “আগুন লাগার প্রায় আধঘন্টা পর দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিছুক্ষণ কাজ করার পর জল শেষ হয়ে যায়। ওই দুটি ইঞ্জিন জল ভরতে গিয়ে প্রায় ২০ মিনিট দেরিতে ঘটনাস্থলে ফিরে আসে। সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত জল নিয়ে দমকলের ইঞ্জিনগুলি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে আগুন এতটা ভয়াবহ আকার নিত না।” তৃণমূল নেতা তিলকবাবুও বিষয়টি দলের তরফে রাজ্যের দমকলমন্ত্রীকে জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “দমকল আধ ঘন্টা দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।” |