স্বাস্থ্য দফতরের ১১ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন জগৎবল্লভপুর ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা। ধৃতের নাম পার্থ সাহা। তিনি স্বাস্থ্য দফতরের অধীন ‘ব্লক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতি’-এর ব্লক অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার ছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পার্থবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে ১১ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগে এফআইআর করেছেন জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ)। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁকে ধরা হয়েছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পার্থবাবু জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন (এনআরএইচএম) প্রকল্পের অধীনে ‘ব্লক অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার’-এর পদে চুক্তির ভিত্তিতে চাকরি করতেন। তাঁর উপরেই ছিল জগৎবল্লভপুর গ্রামীণ হাসপাতাল-সহ এই ব্লকের অধীন সমস্ত প্রাথমিক ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির আর্থিক বিষয়ের দায়িত্ব। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে এই ব্লকে যে সব টাকার বরাদ্দ পাঠানো হত সেই সব ঠিক ভাবে খরচ করে তার হিসাব রাখার কাজটি করতেন পার্থবাবুই। তিনি ক্যাশিয়ারও ছিলেন। চুক্তির ভিত্তিতেই তিনি প্রায় ৮ বছর ধরে এই পদে কাজ করছিলেন। তাঁর দফতর ছিল জগৎবল্লভপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।
হিসাবে গরমিলের বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নজরে আসে মাসখানেক আগে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) ক্যাশবুক পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন যত টাকা খরচ হয়েছে এবং তার পরে বাকি টাকা যা ব্যাঙ্কে থাকার কথা তা নেই। শুধু তাই নয়, টাকা খরচের যে হিসাব ক্যাশবুকে দেখানো হয়েছে তার স্বপক্ষে কোনও প্রামাণ্য নথি ছিল না।
গরমিলের বিষয়টি চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বিএমওএইএইচ জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর অভিযোগটির বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। স্বাস্থ্য দফতরের জেলা অ্যাকাউন্টস আধিকারিকের নেতৃত্বে গঠিত হয় তদন্তকারী দল। তদন্তে তছরুপের অভিযোগটি প্রাথমিক ভাবে প্রমাণীত হয়। তার পরেই পার্থবাবুর বিরুদ্ধে জগৎবল্লভপুর থানায় অভিযোগ জানান সিএমওএইচ স্বাতী দত্ত। তিনি বলেন, “ওই আধিকারিকের কিছু আচরণের বিরুদ্ধে বহু দিন ধরে বিএমওএইচ অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। আমরাও একাধিকবার তাঁকে সাবধান করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত টাকা পয়সা সংক্রান্ত বড় ধরনের গরমিল দেখতে পেয়ে বিএমওএইচ বিষয়টি আমাদের জানান। আমরা বিভাগীয় তদন্ত করে প্রাথমিক ভাবে ১১ লক্ষ টাকা তছরুপের বিষয়টি জানতে পারি। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ জানাই।”
|