সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করেই যে সব নার্সিংহোম চলছে, তাদের ট্রেড লাইসেন্স আর নবীকরণ করা হবে না। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কালনা পুরসভা। পুরসভার চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, “বেশ কয়েকটি নার্সিংহোমেই নানা অব্যবস্থা রয়েছে। আমরি-কাণ্ডের পরে পরিদর্শনে সে সব ধরা পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের উচিত ছিল অবিলম্বে পদক্ষেপ করা। কিন্তু তাদের কাজে আমরা বিরক্ত। তাই পুরসভার হাতে লাইসেন্স নবীকরণ করার যে অধিকার রয়েছে আমরা আর তা করাব না।”
কালনার সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা (এসিএমওএইচ) সুভাষচন্দ্র মণ্ডল অবশ্য বলেন, “আমরি-কাণ্ডের পরে পুরসভা ও দমকলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমরা অভিযান চালিয়েছিলাম। যা যা তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
কালনা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে ১১টি নার্সিংহোম। এর মধ্যে অধিকাংশেরই অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা অপ্রতুল। খুবই খারাপ চারটি নার্সিংহোমের হাল। রাস্তার পাশেই তৈরি একটি নার্সিংহোমে ভিতরে-বাইরে অজস্র ফাটল। অপারেশন থিয়েটর জীর্ণ। সিঁড়ির অবস্থাও খুবই খারাপ। তার মধ্যেও দিবা-রাত্রি সেখানে চলছে রোগী ভর্তি।
সাহা সরকার মোড়ের কাছে রাস্তার পাশেই যে নার্সিংহোম, সেখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বহু মানুষ চলাচল করেন। |
এমনই হাল নাসিংহোমের। — নিজস্ব চিত্র। |
পুরসভার আশঙ্কা, যে কোনও সময়েই ওই নার্সিংহোমটি ভেঙে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে রাস্তার লোকজনও জখম হতে পারেন। ২০ জানুয়ারি একটি চিঠি লিখে স্বাস্থ্য দফতর ও মহকুমাশাসককে সব জানিয়েছেন চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎবাবু।
শুধু এই নার্সিংহোম নয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও তিনটি নার্সিংহোমের প্রবেশ পথ সংকীর্ণ। আগুন লাগলে দ্বিতীয় কোনও পথ খোলা নেই, যেখান দিয়ে রোগী বা তাঁদের আত্মীয় স্বজনদের বের করে নিয়ে যাওয়া যায়। সর্বক্ষণের চিকিৎসক নেই সেখানে। এমনকী, পরিবেশও বেশ অস্বাস্থ্যকর। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ বাগের অভিযোগ, “স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা প্রতিটি নার্সিংহোম ঘুরে দেখেছেন। তাঁদের রিপোর্টেও উঠে এসেছে, নার্সিংহোমগুলির অব্যবস্থার নানা দিক। অথচ, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুরসভার তরফে বার বার আবেদন করা হলেও নানা অজুহাতে এড়িয়ে গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।”
স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। এসিএমওএইচ সুভাষবাবুর দাবি, স্বাস্থ্য দফতর ওই নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। তবে কেন এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। |