সরকারি ভাবে জানানো হয়েছিল, উত্তরবঙ্গ উৎসবের দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী পরিকাঠামো নির্মাণের শিলান্যাস হবে। অথচ গত ১০ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী সেই ঘোষণা না-করায় জলপাইগুড়িতে জল্পনা চলছেই। প্রশাসন সূত্রের খবর উত্তরবঙ্গ উৎসবের দিন দুপুরেই ওই ঘোষণার পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। এই অবস্থায় মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে গিয়ে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের জন্য অধিগৃহীত জমি পরিদর্শন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। এদিন জমি পরিদর্শনের পরে তিনি জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করে সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে তৈরি হওয়া জল্পনায় ইতি টানার চেষ্টা করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “যথাসময়ে নির্মাণ শেষ হবে। সার্কিট বেঞ্চ হল রাজ্য সরকারের স্বপ্নের প্রকল্প। ইতিমধ্যেই স্থায়ী ভবনের নকশা তৈরি করা হয়েছে। যতদূর খবর পেয়েছি, হাইকোর্টও সেই নকশা অনুমোদন করেছেন। প্রশাসনিক স্তরে কাজ শেষ হলেই নতুন টেন্ডার ডেকে ভবন তৈরির কাজ শুরু করে দেওয়া হবে।” সার্কিট বেঞ্চ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করতে আগামী মাসে গৌতমবাবু দিল্লিও যাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের যা করার করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি একান্তই হাইকোর্ট বিচার বিভাগ এবং আইন মন্ত্রকের।” |
এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে জলপাইগুড়ি বার আসোসিয়েশনের সম্পাদক তপন ভট্টাচার্য বলেন, “মন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। উনি আমাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ করিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।” সরকারি ভাবে ঘোষণা না হলেও জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী জমিতে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় সমণ্বয় কমিটির সম্পাদক কমলকৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “চলতি আর্থিক বছরে স্থায়ী পরিকাঠামো নির্মাণের বাজেট বরাদ্দ করার আর্জি মন্ত্রীর কাছে জানানো হয়েছে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু বলেন, “জলপাইগুড়িবাসীর কাছে সার্কিট বেঞ্চ একটি আবেগের বিষয়। সার্কিট বেঞ্চের বিষয়টি আইনমন্ত্রক ও বিচার বিভাগের অধীন। এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই দুই মন্ত্রকের সঙ্গেও আলোচনা জরুরি। তবে রাজ্য সরকার বেঞ্চ দ্রুত চালু করতে বদ্ধপরিকর।” মুখ্যমন্ত্রী সার্কিট বেঞ্চের ঘোষণা করবেন বলে ধরে নিয়ে জলপাইগুড়িতে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আগের দিন একটি মিছিলও করা হয়। সরকারি অনুষ্ঠানে সেই ঘোষণা না হওয়ায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে দল। জেলা যুব তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, ‘পদ্ধতিগত কারণেই’ বেঞ্চের ঘোষণা শেষ পর্যন্ত করা যায়নি। জেলা তৃণমূলের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি। জলপাইগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক গোবিন্দ রায় বলেন, “সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে যে যা খুশি বলে যাচ্ছেন। আর কাজে তার অন্যথা হচ্ছে। একটা সরকার কতটা অপরিকল্পিত ভাবে চলছে, এটা তার অন্যতম প্রমাণ।” |