রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে বহুমুখি হিমঘরের শিলান্যাস করলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। অনুষ্ঠানে পুরনো বাংলা সিনেমার গান গাইলেন আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়ও। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের শালকুমার হাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ওই শিলান্যাস অনুষ্ঠান হয়। মন্ত্রীকে উদ্যোক্তাদের তরফে গান শোনানোর অনুরোধ করা হলে তিনি মাইক্রোফোন হাতে গেয়ে ওঠেন, ‘আজি বিজন ঘরে নিশীথ রাতে’। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় আবৃত্তি করেন। প্রসঙ্গত, শালকুমার হাট এলাকার খুব কাছেই কয়েক মাসে আগে আলুর দাম না-পেয়ে এক কৃষক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অরূপবাবু দাবি করেছিলেন, আত্মহত্যার সঙ্গে আলুর দাম নেমে যাওয়ার সম্পর্ক নেই। অনুষ্ঠানে ছিলেন ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারী, রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়-সহ বিশিষ্টরা। |
অরূপবাবু বলেন, “প্রতি বছর রাজ্যে ৩০-৪০ শতাংশ ফসল হিমঘরের অভাবে নষ্ট হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যে ৩৬টি বহুমুখি হিমঘর তৈরি হচ্ছে। ১৫টি হবে উত্তরবঙ্গে। জলপাইগুড়ি জেলায় হবে দুটি। একটি আলিপুরদুয়ারের শালকুমার হাট হচ্ছে। অন্যটি হবে ধুপগুড়িতে। কোচবিহারে সাতটি, শিলিগুড়িতে একটি, উত্তর দিনাজপুরে দুটি এবং মালদায় তিনটি হিমঘর হবে। প্রায় দুকোটি টাকা খরচ করে জমি কিনে ৮০ মেট্রিক টনের এই হিমঘরটি হবে। এখানে সবজি, ফুল-ফল সংরক্ষণ করতে পারবেন চাষিরা। আলুর চিপসের জন্য প্রক্রিয়াজাত আলুও এখানে রাখা যাবে। কৃষি বিপণন মন্ত্রী বলেন, “হিমঘর থেকে সবজি বের হবার সময় এক দর থাকে। এবং তা বাজারে পৌঁছানোর পরে দাম অনেক বেড়ে যায়। চাষী ও বাজারের মধ্যে যে মধ্যসত্বভোগী রয়েছে, তাদের জন্যই দাম বেড়ে যাচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি চাষিরা যাতে ফসলের ভাল দাম পান এবং ক্রেতাদের মুল্যবৃদ্ধির চাপে পড়তে না হয়। নয় মাসের মধ্যে এই বহুমুখি হিমঘর তৈরীর কাজ শেষ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।” শালকুমার হাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান কৃষ্ণপদ রায় জানান, তাঁর চল্লিশ ডেসিমিল জমিতে হিমঘর তৈরি হচ্ছে। জমিটি সরকারি ভাবে এখনও কেনাবেচা না-হলেও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তিনি জমিতে বহুমুখি হিমঘর তৈরি করতে দিতে রাজি হয়েছেন। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “এই প্রথম এলাকায় সরকারি উদ্যোগে বহুমুখি হিমঘর হচ্ছে। এতে চাষিরা উৎপাদিত ফসল রাখতে পারবেন। চেষ্টা করছি হর্টিকালচার দফতরের উদ্যোগে এলাকায় এমন গাড়ির ব্যবস্থা করতে যাতে ফসল বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় নষ্ট না হয়।”
|
ছবি দু’টি তুলেছেন নারায়ণ দে। |